অপরাধ স্বীকার বাবলু বাগচীর
নিউজ ডেস্ক, আলিপুরদুয়ার: আলিপুরদুয়ারের মেজবিলে ষষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্র হত্যার ঘটনায় অপরাধ স্বীকার করল পুলিশের হাতে আটক বাবলু বাগচী। তন্ত্রসাধনার জন্য মনোজকে হত্যা করেছে বাবলু,পুলিশের জেরায় অপরাধ স্বীকার আটক ঐ ব্যক্তির। শনিবার সন্ধ্যায় আলিপুরদুয়ার জেলা পুলিশের এসডিপিও দেবাশীষ চক্রবর্তী সাংবাদিক সম্মেলন করে এইদিন অপরাধীর অপরাধ স্বীকার করার কথা বলেন। তিনি বলেন, বাবলু বাগচীর ছেলে নাড়ু বাগচীর সঙ্গে মেলায় গিয়েছিল মনোজ বর্মন। নাড়ু বাগচীকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে অসংলগ্ন কথা বলতে থাকে। পরে আমরা তার বাবা বাবলু বাগচীকে জিজ্ঞাসাবাদ করি এবং তার মধ্যেও অসংলগ্ন কথা শুনতে পাই। পরে আমরা বাবলু বাগচীকে আবার জিজ্ঞাসাবাদ করার তোরজোড় শুরু করি তবে সে নিরুদ্দেশ হয়ে যায়। এসডিপিও দেবাশীষ চক্রবর্তী বলেন, পরে আমরা একটি স্থান থেকে তাকে আটক করি এবং জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে তার অপরাধের কথা স্বীকার করে। সে আমাদের জানায় তন্ত্রসাধনার জন্য সে ওই ছেলেটিকে হত্যা করে।
উল্লেখ্য যে, বাবলু বাগচীর দশ বছরের পুত্র নাড়ু বাগচীর সাথে বিকেল তিনটা নাগাদ মেজবিলে রাসমেলার মাঠে যান মনোজ বর্মন। বোনের জন্য শিঙারা কিনতে যান চৌদ্দ বছরের মনোজ। কিন্তু রাত হয়ে গেলেও বাড়ি ফেরেনি সে। অপরদিকে নাড়ু বাড়ি ফিরে আসে। স্থানীয়দের কাছ থেকে জানা গিয়েছে, নাড়ু ও মনোজের সঙ্গে আরও দুই বন্ধু ছিল। তবে মনোজ বাড়ি না ফেরায় রাতভর মনোজের খোঁজ চালায় পরিবার ও প্রতিবেশীরা। তারা জানান, ওইদিন রাতে বাবলু বাগচীর ছেলে নাড়ুকে মনোজের কথা জিজ্ঞেস করতে গেলে মনোজের বাবা মাকে বাড়িতে ঢুকতে দেননি বাবলু বাগচী। চারদিকে খোঁজার পরেও খোঁজ মেলেনি মনোজের। পরের দিন মেজবিল রাসমেলার মাঠ থেকে দেড় কিমি দূরে বুড়ি তোর্সা নদীর পারে পাওয়া যায় মনোজের নলি কাটা দেহ।
ঘটনার ৪৮ ঘন্টা না কাটতেই আলিপুরদুয়ার থানার পুলিশ প্রতিবেশী বাবলু বাগচীকে মনোজ হত্যার ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে। স্থানীয় বাসিন্দা কৃষ্ণ বর্মন বলেন, ঘটনার পর এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায় বাবলু। পুলিশ শুক্রবার ভোর নাগাদ বাবলু বাগচীকে পলাশবাড়ীর মরিচঝাঁপি থেকে আটক করে। আলিপুরদুয়ার পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনার তদন্তের স্বার্থে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য আটক করা হয় ঐ ব্যক্তিকে। পুলিশের জেরায় নিজের অপরাধের কথা স্বীকার করে বাবলু। অন্যদিকে অপরাধীর দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন শালকুমারহাট – পলাশবাড়ীর নাগরিক মহল। মনোজ যে বিদ্যালয়ের ছাত্র সেই শালকুমারহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পীযূষ কুমার রায় অপরাধীর কঠোর ও দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।