একি করলেন এক গৃহশিক্ষক!
নিউজ ডেস্ক,ফালাকাটাঃ শিক্ষক মানে গুরু। মা-বাবারা যাদের কাছে ছেলে-মেয়েদের পড়াশোনার দায়িত্ব দিয়ে নিশ্চিত থাকেন তারই নাম শিক্ষক। কিন্তু এ কেমন শিক্ষক! এই শিক্ষক তো ছাত্রীদের সর্বনাশ করার নেশায় মত্ত!
সন্তান তুল্য ছাত্রীদের ধর্ষণ করেছেন দিনের পর দিন!
অভিযুক্ত প্রাইভেট শিক্ষকের নাম রুস্তম আলী, বয়স ৪৯ বছর। স্ত্রী, সন্তান সহ এখন পলাতক এই কীর্তিমান।
অভিযোগ নার্সারি স্কুলের ভেতর প্রাইভেট শিক্ষকের হাতে দীর্ঘদিন ধর্ষণের শিকার হয় দুই নাবালিকা ছাত্রী। ঘটনা জানাজানি হতেই ক্ষিপ্ত জনতা ভাঙচুর চালায় স্কুলে। ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার রাতে আলিপুরদুয়ার জেলার ফালাকাটা ব্লকের গুয়াবরনগর অঞ্চলের প্রমোদনগর এলাকায়। বৃহস্পতিবার মেডিকেল পরীক্ষার পর দুই ছাত্রীকে ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে বয়ান দেওয়ার জন্য আলিপুরদুয়ারে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
শিক্ষক সমাজের কলঙ্ক এই কীর্তিমানের ঘটনার পর আতঙ্কিত অন্য অভিভাবকরাও।
মেডিকেল পরীক্ষার পর বৃহস্পতিবার দুই ছাত্রীকে ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে গোপন জবানবন্দি দেওয়ার জন্য আলিপুরদুয়ারে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। দুই ছাত্রীর পরিবার সূত্রে জানা গেছে, প্রমোদনগর উচ্চ বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণীর দুই ছাত্রী প্রমোদনগর সিএনসি নার্সারি স্কুলে রুস্তম আলীর কাছে টিউশন পড়ত। রুস্তম আলী ওই নার্সারি স্কুলের প্রিন্সিপাল। লকডাউনের কারণে বন্ধ ছিল স্কুল। স্কুল বন্ধ থাকায় রোজ সকালে সেখানে টিউশন পড়াতেন রুস্তম আলী। টিউশনের পর দুই ছাত্রীকে লাগাতার ধর্ষণ করেছেন বলে অভিযোগ। বুধবার ঘটনার কথা জানাজানি হতেই রাতের বেলা ঐ নার্সারিতে ভাঙচুর চালায় এলাকাবাসী। ঘটনার খবর পাওয়া মাত্র সেখানে ফালাকাটা থানার অন্তর্গত জটেশ্বর ফাঁড়ির পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। পরে ফালাকাটা থানা থেকে আরো পুলিশবাহিনী পৌঁছয়। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ওই নার্সারি থেকে গর্ভনিরোধক পিল এর প্যাকেট ছাড়াও বেশ কয়েকটি ব্যবহৃত কন্ডোম পাওয়া গিয়েছে। স্থানীয়দের দাবি, এক দুজন নয়, একাধিক ছাত্রীর সঙ্গে খারাপ আচরণ করেছেন ওই প্রাইভেট শিক্ষক। অনেকের দাবি, স্কুল ঘরের ভেতর ব্যবহৃত কন্ডোম ও গর্ভনিরোধক পিল এর প্যাকেট পড়ে থাকা দেখে অনুমান করা যায় যৌন ব্যবসাও চালাতে পারেন সেই শিক্ষক। ঘটনায় উত্তেজনা ছড়ায় এলাকায়। রাতে পুলিশ পিকেট বসানো হয়।
নির্যাতিতা এক ছাত্রীর বাবা বলেন, ঘটনার কথা বাইরে প্রকাশ করলে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে দিনের পর দিন ছাত্রীদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করতেন তিনি। সেই ভয়ে মেয়ে কিছু বলেনি। শিক্ষকের ভয়ে টিউশনে যেতে ভয় পেত ওরা। কেন টিউশনে যাবেনা এটা জানতে জোর করলে মেয়ে ঘটনার কথা জানায়। একই পাড়ায় সপ্তম শ্রেণীর আর এক ছাত্রীর সঙ্গে একই ঘটনা ঘটেছে। ঘটনায় নিন্দা প্রকাশ করে অপরাধীকে দ্রুত গ্রেপ্তার করে শাস্তির দাবি তুলেছে বিভিন্ন মহল। জটেশ্বর ঠাকুর পঞ্চানন বর্মা স্মারক সমিতির সম্পাদক কার্তিক চন্দ্র রায় বলেন, অত্যন্ত নিন্দনীয় ঘটনা, ঘটনায় জড়িত অভিযুক্তকে দ্রুত গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাই। পুলিশের কাছে আমাদের দাবি দ্রুত অপরাধীকে গ্রেপ্তার করতে হবে। ফালাকাটা থানার অন্তর্গত জটেশ্বর ফাঁড়ির ইনচার্জ উৎপল নার্জিনারী বলেন, অভিযোগ জমা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।