করোনার প্রকোপ না কমতেই আজ থেকে চালু হচ্ছে সমস্ত অফিস, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, বিপদের আশঙ্কায় দেশবাসী
নিউজ ডেস্ক, শিলিগুড়ি, ৮ জুনঃ
রাস্তায় ভিড়, মার্কেটে ভিড়, বেড়ে গেছে স্পেশাল ট্রেন, বাস এর সংখ্যা, চালু হয়েছে বিমান পরিষেবা। করোনা টেস্টিং, প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারান্টাইনের ব্যবস্থা করতে নাজেহাল সরকার। করোনা আক্রান্তের সংখ্যার হিসাবে ইতিমধ্যেই ইতালি, স্পেনকে টপকে পঞ্চম স্থানে ভারত। এরমধ্যেই আজ খুলছে রাজ্যের সমস্ত অফিস, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান। এরপর রাজ্য ও দেশের অবস্থা কোন জায়গায় গিয়ে দাড়াবে তা সহজেই অনুমেয়। ওয়ার্ল্ড হেলথ্ অর্গানাইজেশন (WHO) এর সতর্কবার্তা সত্বেও দেশজুড়ে ক্রমশ শিথিল হয়েছে লকডাউনের নিয়ম কানুন। কেন্দ্র সরকারের পক্ষ থেকে পরিযায়ী শ্রমিকদের খাদ্য, বাসস্থান এর দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট রাজ্যের ঘাড়ে চাপিয়ে দিলেও বাস্তব ক্ষেত্রে তা কার্যকরী হয়নি, ফলে শ্রমিকরা বাড়ি ফেরার জন্য উদগ্রীব হয়ে পড়েছিলেন।
বিদেশ থেকে স্বদেশীদের আনার পরে বা অন্য রাজ্য থেকে পরিযায়ী শ্রমিকদের আনার পরে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারান্টাইন বাধ্যতামূলক না করায় চারদিকে ছড়িয়ে পড়ছে মহামারী। কিছু কিছু ব্যক্তির ট্রাভেল হিস্ট্রি না থাকা সত্বেও করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন। উত্তরবঙ্গও এর ব্যতিক্রম নয়। শিলিগুড়ি বাঘাযতীন কলোনির এক গানের শিক্ষক সম্প্রতি করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা যান কিন্তু তার কোনো ট্রাভেল হিস্ট্রি ছিল না। শিলিগুড়ি দেবীডাঙার একই পরিবারের ৬ জন ব্যক্তি করোনা আক্রান্ত হলেও তাদের কোনো ট্রাভেল হিস্ট্রি পাওয়া যায়নি যা যথেষ্ট চিন্তার বিষয়। মহারাষ্ট্র, দিল্লি সহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ক্রমশ বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা যা এখনি না আটকানো গেলে আগামী দিনে কোভিড হাসপাতাল গুলিতে হয়তো আর বেড পাওয়া যাবে না। অন্যদিকে চিকিৎসকরাও ক্রমশ আক্রান্ত হচ্ছেন। শিলিগুড়ির চ্যাং কোভিড হাসপাতালের সুপার সহ উত্তরবঙ্গের ১১ জন চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী সহ বেশকিছু পুলিশ কর্মীও করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। ইতিমধ্যেই রাজ্য ও দেশের বেশকিছু চিকিৎসক কোয়ারান্টাইনে চলে গেছেন। এই সংখ্যা ধীরে ধীরে বাড়লে আগামী দিনে আক্রান্তদের চিকিৎসা করার জন্য চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীর আকাল দেখা দেবে। পাশাপাশি আইন শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য পুলিশ কর্মীর সঙ্কটও দেখা দিতে পারে।
বিভিন্ন রাজ্য ও দেশের আর্থিক হাল ফেরাতে ইতিমধ্যেই কিছু সরকারি, বেসরকারি অফিস খোলা হয়েছে। চাকুরী বজায় রাখার জন্য জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কর্মচারীরাও অফিসে ছুটছেন। বাসে বসার ক্ষেত্রেও বিধিনিষেধ আলগা করা হয়েছে ফলে এখন সুরক্ষিত নন বাস যাত্রীরাও। এই সময় সমস্ত অফিস, ধর্মীয় স্থান সবকিছু খুলে গেলে বিপদ আরও ত্বরান্বিত হতে পারে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞ মহল। সেইক্ষেত্রে আগামী দিনে ইতালি, আমেরিকার মতো যদি এদেশেও মৃত্যু মিছিল শুরু হয় তাহলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। আর এর দায়িত্ব নিতে হবে কিন্তু এদেশের রাষ্ট্রনায়কদেরই।