কাঠ পাচারের অভিযোগে গ্রেপ্তার তৃনমূল কংগ্রেস নেতা

নিউজ ডেস্ক, আলিপুরদুয়ার: বেআইনি কাঠ পাচারের অভিযোগে গ্রেপ্তার আলিপুরদুয়ারের কালচিনি ব্লক তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি ও তৃণমূল কংগ্রেসের এসটি সেলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক পাসাং লামা। রবিবার রাতে বীরপাড়া থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। সোমবার কড়া পুলিশি নিরাপত্তায় পাসাং লামাকে আলিপুরদুয়ার আদালতে তোলে পুলিশ। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বৃহস্পতিবার প্রশাসনিক বৈঠক থেকে আলিপুরদুয়ারের পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দিয়ে বলেছিলেন, কেউ হয়তো হেরিটেজ বিক্রি করছে। যেই করে থাকুক, তার বিরুদ্ধে যেন কঠোর পদক্ষেপ করা হয়। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পরেই জেলা প্রশাসন নড়েচড়ে বসে। কালচিনির বেশ কয়েকটি এলাকায় লাগাতার তল্লাশি চালিয়ে আসবাবপত্র সহ কাঠ উদ্ধার করে পুলিশ। পাসাং লামার বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে বেআইনি কাঠ পাচারের অভিযোগ উঠেছিল। রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় থাকার সৌজন্যে রক্ষাও পায় বেশ কয়েকবার। কিন্তু শেষমেশ মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে আলিপুরদুয়ার জেলা পুলিশ কালচিনি ব্লক তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতিকে গ্রেপ্তার করে। ঘটনায় অস্বস্তিতে পড়েছে তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্ব। একজন কাঠ মাফিয়াকে ব্লক সভাপতির পদে বসানোয় বিরোধী দলগুলি তৃণমূলের সমালোচনা করেছে। ২০১৯ সালে কালচিনি ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি মনোনীত হন পাসাং লামা। ২০২১ সালে তৃণমূল কংগ্রেসের কালচিনি বিধানসভার প্রার্থীও হন। বিজেপির কাছে পরাজিত হন তিনি।
রবিবার কালচিনিতে পাসাং লামার বাড়িতে বনদপ্তর ও জেলা পুলিশ যৌথ অভিযান চালায়। বাড়িতে কাঠ ও আসবাবপত্র মজুত ছিল বলে জানা গেছে। তবে পুলিশ কর্তারা এবিষয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছেন। রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক এবং ফালাকাটার বিধায়ক দীপক বর্মন বলেন, “কালচিনি ব্লক তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি পাসাং লামার বাড়ি থেকে কুড়ি থেকে পঁচিশ লক্ষ টাকা মূল্যের অবৈধ কাঠের আসবাবপত্র উদ্ধার হয়েছে। পাসাং লামাই শুধু নয় আলিপুরদুয়ারে আরও অনেকেই আছে যারা বনজ সম্পদকে অবৈধভাবে বিক্রি করছেন।” মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে দীপক বর্মন বলেন, “ওই ব্যক্তি একজন মাফিয়া এটা সবাই জানে। শুধু হয়ত মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী জানতেন না। হেরিটেজ বিক্রি হচ্ছে এটা তিনি হঠাৎ করে জানতে পারলেন? এটাও আমাদের মানতে হবে! আসলে পশ্চিমবঙ্গে আলাদা করে কোনও নিয়ম নেই। সমস্তটাই মুখ্যমন্ত্রীর অঙ্গুলীহেলনে হয়েছে। এখানে যারা অপরাধী তারা পার পেয়ে যায়। যারা হয়ত একটু কথা শুনছেন না তাদের নির্দেশ দিয়েই মুখ্যমন্ত্রী একটু কথা শোনাতে চান।” অন্যদিকে পাসাং লামার গ্রেপ্তারিতে বেজায় অস্বস্তিতে পড়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। কালচিনির বিভিন্ন এলাকায় পাসাং লামার হাত ধরে বিজেপি ও বামফ্রন্টের অনেকেই তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন। পাসাংয়ের গ্রেপ্তারিতে তৃণমূলের ওপর প্রভাব পড়বে বলে অনেকের মত। তবে জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি প্রকাশ চিক বরাইক বলেন, “প্রশাসন প্রশাসনের কাজ করবে, প্রশাসনের কাজে দল হস্তক্ষেপ করবে না।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *