কাতরাচ্ছেন রোগী, ধূপগুড়ির হাসপাতালে ডাক্তার ব্যস্ত মেডিকেল রিপ্রেজেন্টেটিভদের সঙ্গে
সুব্রত রায়, ধূপগুড়ি: স্বাস্থ্য দপ্তরের নির্দেশকে অমান্য করে সরকারি হাসপাতালে দাপাদাপি মেডিকেল রিপ্রেজেন্টেটিভদের । সরকারি হাসপাতালের ইমারজেন্সিতে মুমূর্ষু রোগীকে না দেখে কর্তব্যরত ডাক্তার মেডিকেল রিপ্রেজেন্টেটিভদের সঙ্গে ঔষধ প্রেসক্রাইব এর আলোচনায় ব্যস্ত। মুমূর্ষু রোগীর আত্মীয়ের ডাকেও সাড়া মিলছে না ডাক্তারের। জলপাইগুড়ির ধূপগুড়ি হাসপাতালের ঠিক এই ছবিই ধরা । যদিও ক্যামেরার সামনে মুখ খুলতে চাননি সেই অভিযুক্ত ডাক্তার ও মেডিকেল রিপ্রেজেন্টেটিভরা। জানা যায় প্রত্যন্ত শালবাড়ি এলাকার বাসিন্দা বাসবি সরকার তার এক আত্মীয়কে পেটের ব্যথা ও বমি হওয়ায় ধূপগুড়ি হাসপাতালে নিয়ে আসেন । কিন্তু হাসপাতালের কর্তব্যরত ডাক্তার তখন মেডিকেল রিপ্রেজেন্টেটিভদের সঙ্গে কথায় ব্যস্ত । এমনকি হাসপাতালের এক স্বাস্থ্যকর্মী ডাক্তারকে জানান একজন রোগীর বমি হচ্ছে। তবে ডাক্তারের কানে যায়নি। এরপর রোগীর আত্বীয় দুই তিনবার ডাকলেও সাড়া দেননি সেই ডাক্তার।আর সরকারি হাসপাতালে মেডিক্যাল রিপ্রেজেন্টেটিভদের ফের এই দাপাদাপির দৃশ্য দেখে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। সরকারি হাসপাতালে কর্তব্যরত ডাক্তারের সাথে এভাবে কি কথা বলতে পারেন মেডিকেল রিপ্রেজেন্টেটিভরা ? নাকি সরকারি নির্দেশকে পুরোপুরি অমান্য করে স্বেচ্ছায় এই কাণ্ড ঘটাচ্ছেন একশ্রেণীর ডাক্তাররা ? একশ্রেণীর অসাধু ডাক্তারদের নিয়ে একটা সময় গান গেয়েছিলেন সংগীত শিল্পী নচিকেতা। কিন্তু করোনার সময়কালে ডাক্তারদের নিরলস প্রয়াস এবং নচিকেতার সেই গানকেই পাথেয় করে ডাক্তারদের একটি গান কিন্তু অন্য ছবি তুলে ধরেছিল। সবাই তখন ডাক্তারদের জয়ধ্বনী দিয়েছিল।কিন্তু মুমূর্ষু রোগীকে ছেড়ে মেডিকেল রিপ্রেজেন্টেটিভ সঙ্গে কথায় ব্যস্ত ডাক্তার। ধূপগুড়ি হাসপাতালের এই ছবি দেখার পর নচিকেতার সেই পুরনো গান কিন্তু আবার সামনে চলে আসছে। ” ও ডাক্তার …………… সরকারি হাসপাতালের পরিবেশ, আসলে তো তোমরাই করেছ শেষ……. ।”ধূপগুড়ি হাসপাতালের ইমারজেন্সিতে ডাক্তারের সাথে দেখা করে বেড়িয়ে যাওয়ার সময় মেডিক্যাল রিপ্রেজেন্টেটিভদের জিজ্ঞাসা করা হয় – আপনারা কি ইমারজেন্সিতে ঢুকতে পারেন ? কিন্তু ক্যামেরা দেখেই দুজন রিপ্রেজেন্টেটিভ কিছু না বলেই দ্রুত নিয়ে হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যান। এবিষয়ে অভিযুক্ত ডাক্তার সুপ্রিয়া কুমারী কে প্রশ্ন করা হলে, তিনি জানান, “এখন ইমারজেন্সিতে রোগী আছে। আর আমি কারো সাথে কথা বলিনি।” এবিষয়ে স্থানীয় কাউন্সিলর তথা পৌরসভার বিরোধী দলনেতা কৃষ্ণদেব রায় জানান,” হাসপাতাল নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই অভিযোগ। হাসপাতালে চিকিৎসা ব্যবস্থা এমনিতেই ভালো নয় তার ওপর এ দিনের ঘটনা যথেষ্ট উদ্ধেগজনক। অবশ্য সারা রাজ্যেই স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে।” রাজ্যের মানুষ যেখানে চিকিৎসা পরিষেবার জন্য সরকারি হাসপাতালের ওপর অনেকাংশে নির্ভরশীল সেখানে মুমূর্ষু রোগী ছেড়ে ডাক্তাররা মেডিক্যাল রিপ্রেজেন্টেটিভদের সঙ্গে কথায় ব্যস্ত ।এবিষয়ে রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান তথা স্থানীয় বিধায়ক মিতালী রায় জানান,” এভাবে সরকারি হাসপাতালের ইমারজেন্সিতে গিয়ে মেডিকেল রিপ্রেজেন্টেটিভরা ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলতে পারেনা। এবিষয়ে আমি হাসপাতালের বিএমওএইচ এবং সিএমওএইচ এর সঙ্গে কথা বলব। যেহেতু কলকাতা যাচ্ছি প্রয়োজনে বিষয়টি নিয়ে আমি সেখানেও জানাব।”