গঠণ হলো বানারহাট পঞ্চায়েত সমিতি
ক্ষীরোদা রায়, বানারহাটঃ পঞ্চায়েত সমিতির বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পদে কাকে রাখা হবে একবছর ধরে চলা এমন বিতর্ক কাটিয়ে শেষমেশ গঠিত হল জলপাইগুড়ি জেলার বানারহাট পঞ্চায়েত সমিতি। জেলার ধূপগুড়ি ব্লক ভেঙে গঠণ করা হয় নতুন ব্লক বানারহাট। পঞ্চায়েত সমিতির মোট সদস্য সংখ্যা ২১ জন। তৃণমূলের রয়েছে ১৬ জন ও বিজেপির ৫ জন। এইদিন তৃণমূলের ১৪ জন সদস্য সহ মোট ১৯ জন উপস্থিত ছিলেন। বিজেপির ৬ জন সদস্যের মধ্যে মঙ্গলবার রাতে একজন তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেওয়ায় তাদের সদস্য সংখ্যা কমে যায়। তৃণমূলের সীমা চৌধুরীকে সভাপতি ও সহ সভাপতি পদে মনোনীত করা হয় আরতী মাহালিকে। পঞ্চায়েত সমিতির স্থায়ী সমিতি ও কর্মাধ্যক্ষ পদে কাদের রাখা হবে তা এখনও স্থির হয়নি। জানুয়ারিতে দুয়ারে সরকারের কাজ শেষ হবার পরে গঠন করা হবে পঞ্চায়েত সমিতির স্থায়ী সমিতি ও বাছাই করা হবে অর্থ, পূর্ত, শিক্ষা, স্বাস্থ্য সহ বিভিন্ন কর্মাধ্যক্ষ পদ।
বুধবার বানারহাটে তাসা পার্টির বাজনা ও সবুজ আবির উড়ল আকাশে। দীর্ঘদিনের দাবি বানারহাট ব্লক গঠণ বাস্তবায়িত হয়েছে ইতিমধ্যে। ধূপগুড়ি ব্লক ভেঙে মোট সাতটি গ্রাম পঞ্চায়েত নিয়ে বানারহাট ব্লক গঠণ করা হয়। ভারত – ভূটান সীমান্তে থাকা এই ব্লকে পঞ্চায়েত সমিতি গঠণ নিয়ে টালবাহানা চলছিল একবছর ধরে। বিরোধী বিজেপির অভিযোগ ছিল শাসকদলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব পঞ্চায়েত সমিতি গঠণের পথে বাধা। দলের ভেতর পদ নিয়ে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের অবসান ঘটিয়ে শেষমেশ গঠন করা হল বানারহাট পঞ্চায়েত সমিতি। পঞ্চায়েত সমিতির প্রথম সভাপতি সীমা চৌধুরী এজন্য ধন্যবাদ জানিয়েছেন জেলা সভাপতি মহুয়া গোপকে। তিনি বলেন, “জেলা সভাপতি মহুয়া গোপ এত সুন্দর ভাবে পঞ্চায়েত সমিতি গঠন করে দিল তার জন্য তাঁকে বাহবা দিতে হয়। “চা বাগান অধ্যুষিত বানারহাট ব্লকের স্বাস্থ্য পরিসেবার উন্নতির দিকে নজর দেবেন পঞ্চায়েত সমিতির প্রথম সভাপতি সীমা চৌধুরী। উন্নয়নকে গুরুত্ব দিয়ে তিনি বলেন, “চা বাগান অধ্যুষিত এলাকায় প্রথম লক্ষ্য হলো স্বাস্থ্য পরিসেবা। বানারহাট হাসপাতালে অ্যাম্বুলেন্স নেই। জলপাইগুড়ি, মালবাজার বা বীরপাড়ায় রোগী রেফার করা হলে সমস্যা হয়।” তিনি বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মহিলাদের অগ্রাধিকার দিয়ে বহু কাজ করছেন, আমার জন্ম চা বাগানে, চা বাগানে মহিলা শ্রমিকেরা সন্তানদের ক্রেশে রেখে চা পাতা তোলার কাজ করেন, বর্ষাকালে তাদের সমস্যা হয়। মহিলাদের সমস্যা সমাধানে উদ্যোগ নেবার চেষ্টা করব।” চা বাগানের কন্যা আরতী মাহালি পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি। তিনি বলেন, “চা বাগান ক্ষেত্র উন্নয়নের দিক থেকে খুব পিছিয়ে পড়া, আমাদের লক্ষ্য থাকবে চা বাগান এলাকার উন্নয়ন।”
এইদিন বানারহাটে জলপাইগুড়ি জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতি মহুয়া গোপ ও যুব তৃণমূলের সভাপতি সৈকত মিশ্র উপস্থিত ছিলেন। তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বানারহাট পঞ্চায়েত সমিতি গঠণের উদ্যোগ নিতে মহুয়া গোপের উপর দায়িত্ব দিয়েছেন। পঞ্চায়েত সমিতি গঠন না হওয়ায় নতুন ব্লকে উন্নয়নমূলক কাজ থমকে গিয়েছে। সমস্যায় পড়েছেন ছাত্রছাত্রীরাও। এইদিন বানারহাটে দাঁড়িয়ে জেলা সভাপতি মহুয়া গোপ বলেন, “বানারহাট ব্লক গঠণ করা হয়েছে আগেই, এবার পঞ্চায়েত সমিতি গঠন হলো। প্রশাসনিক দিক থেকে একধাপ এগিয়ে গেল। উন্নয়নের দিক থেকেও এগোবে বানারহাট। পঞ্চায়েত সমিতির স্থায়ী কমিটি ও কর্মাধ্যক্ষ পদে সদস্য মনোনয়ন করা হবে জানুয়ারি মাসে দুয়ারে সরকার ক্যাম্প শেষ হবার পর।”