ডুডুয়া নদী ফালাকাটা বিধানসভা থেকে বিচ্ছিন্ন করেছে ভগৎ পাড়াকে, বাসিন্দাদের দাবি বিধায়ক পদপ্রার্থীরা দেখে যাক তাদের অবস্থা
ক্ষীরোদা রায়, ধূপগুড়ি, ২৫ মার্চ: শিয়রে বিধানসভা ভোট। চলছে ভোটের প্রচার। প্রার্থী থেকে নেতাকর্মীরা চারদিকে ছুটছেন প্রচারে। কিন্তু তাঁদের দূর্ভাগ্য বিধানসভা নির্বাচনের কোন প্রার্থীকেই এতদিন তাঁদের এলাকায় আসতে দেখেননি। যারপরনাই ক্ষোভ উঁকি দিচ্ছে আলিপুরদুয়ার জেলার ফালাকাট বিধানসভা ক্ষেত্রের ধনীরামপুর ২ অঞ্চলের ঘাটপাড় সরুগাঁও গ্রামের ভগৎ পাড়ার আদিবাসী বারোটি পরিবারের। উল্লেখ্য, ডুডুয়া নদী ঐ বারোটি পরিবারকে ফালাকাটা বিধানসভা ক্ষেত্রের মূল অংশ থেকে বিচ্ছিন্ন করে রেখেছে। বাসিন্দাদের দাবি বিধায়ক পদপ্রার্থীরা এসে দেখে যাক তাঁদের অবস্থা।
পশ্চিম থেকে পূর্বে এসে ডুডুয়া নদী মিশেছে উত্তর দিক থেকে আসা ডিমডিমা বা কলি নদীর সঙ্গে। সেই মিলিত স্রোতের একদিকে রয়েছে জলপাইগুড়ি জেলার ধূপগুড়ি বিধানসভার গাদং ১ এর কাজিপাড়া ও গাদং ২ অঞ্চলের ঝাড় শালবাড়ি গ্রাম এবং অপরদিকে রয়েছে আলিপুরদুয়ার জেলার ফালাকাটা বিধানসভার গুয়াবরনগর অঞ্চলের মালসাগাঁও ও ধনীরামপুর ২ অঞ্চলের ঘাটপাড় সরুগাঁও গ্রামের সম্পূর্ণ অংশ। ফালাকাটার ঘাটপাড় সরুগাঁও গ্রামের ছোট্ট একটা অংশ ভগৎ পাড়া রয়েছে ধূপগুড়ি বিধানসভার দিকে। ডুডুয়া নদী ফালাকাটা বিধানসভা কেন্দ্র থেকে বিচ্ছিন্ন করে রেখেছে কৃষি নির্ভর ভগৎ পাড়াকে।এলাকার পঞ্চায়েত সদস্য মিত্র ভগৎ বলেন, “এতদিন পর্যন্ত কোন প্রার্থী এখানে ভোট প্রচারে আসেননি। আমরা ভোটের পরেও বিধায়ক বা সাংসদকে কখনো পাইনি এই এলাকায়। এখানে রাস্তাঘাট, পানীয় জল, অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র নেই, নেই প্রাথমিক বিদ্যালয়।” বাসিন্দাদের সূত্রে জানা গেছে, সেখানে ১২টি পরিবার রয়েছে, তাঁদের মধ্যে ভোটার রয়েছেন ৩৬ জন। বিদ্যুৎ বিল জমা দেন ধূপগুড়ি বিদ্যুৎ বন্টন কার্যালয়ে এবং রেশন সামগ্রী সংগ্রহ করেন ধূপগুড়ি গাদং ২ অঞ্চলের ঝাড় শালবাড়ি গ্রামের রেশন ডিলার আবেদ আলির রেশন দোকান থেকে। গ্রামবাসী তর্ক ভগৎ বলেন, “প্রশাসনিক সব কাজ জটেশ্বর বা ফালাকাটায় করতে হয়, শীতের সময় নদী পেড়িয়ে যাতায়াত করা গেলেও বর্ষায় পয়ত্রিশ কিমি ঘুরে যেতে হয়। ডুডুয়া নদীর ওপর সেতু নির্মাণ হলে ব্লকের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ তৈরি হবে।”প্রান্তিকের স্বর কেন্দ্রের কাছে না পৌঁছানোর ফলে এই এলাকার উন্নয়নে নজর দেয়নি প্রশাসন। পঞ্চায়েত সদস্য মিত্র ভগৎ বলেন, “কংক্রিটের রাস্তাও নেয়, ধূপগুড়ির গাদং ২ অঞ্চলের রাস্তার কাজের পাথর জোরজবরদস্তি টেনে এনে আমরা আমাদের যাতায়তের পথে বিছিয়ে দিয়ে কোনভাবে যাতায়াত করতে পারছি।” স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে বাসিন্দাদের জন্য তিনি গৃহ নির্মাণের ব্যবস্থা টুকুই করতে পেরেছেন বলে জানালেন।কৃষি প্রধান ভগৎ পাড়ায় ফি বছর ডুডুয়া নদীর প্লাবনে ডুবে থাকতে হয়। ডুডুয়া নদীতে পার বাঁধ নির্মাণ না হওয়ায় বন্যার জলে ভেসে থাকতে হয় তাঁদের। তাঁরা উন্নয়ন চান, উন্নয়নের জন্য তাঁরা চান বিধানসভার প্রার্থীরা একবার ঘুরে যান তাঁদের ভগৎ পাড়ায়।