তলবি সভায় গরহাজির সদস্যরা,কটাক্ষ বিজেপির
নিউজ ডেস্ক,চাঁচল; ২৯ সেপ্টেম্বর : স্বপদে বহাল থাকলেন শাসকদলের প্রধান ও উপ-প্রধান।মালদার চাঁচল-২ নং ব্লকের মালতিপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূলের প্রধান ও উপ্রধানের বিরুদ্ধে জোট বেধে অনাস্থা এনেছিলেন বিরোধী বিজেপি, কংগ্রেস, সিপিএমের সদস্যরা। তাদের সঙ্গে যোগ দেন তৃণমূলেরও দুই সদস্য।
মঙ্গলবার ছিল তৃণমূল পরিচালিত মালতিপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে তলবি সভা। তবে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে অনাস্থা আনা সদস্যদের কেউই হাজির হননি। ফলে পঞ্চায়েতের বোর্ড পূর্বের মতো বহাল থাকলো বলে জানিয়েছেন চাঁচল-২ নং ব্লকের বিডিও দিব্যজ্যোতি দাস।
উল্লেখ্য,২০১৮ সালের নির্বাচনে ২০ আসন বিশিষ্ট মালতিপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে দশটি আসন পায় তৃণমূল। এছাড়া
বিজেপি ৩, কংগ্রেস ৫ ও সিপিআইএম ২ টি তে জয়ী হয়।বিরোধীদের সাথে হাত মিলিয়ে প্রধান হিসেবে নির্বাচিত হয় আব্দুল হালিম ও উপপ্রধান হয় মৌসুমী খাতুন।তবে একুশের বিধানসভা নির্বাচন প্রাক্কালে প্রধানের প্রতি দূর্নীতির অভিযোগ তুলে সরব হন দলেরই একাংশ। এরপর তৃণমূলের দুই সদস্য বিরোধীদের সঙ্গে যোগ দেন। কিন্তু অনাস্থা পেশ করলেও এদিন অনাস্থাকারীরা গরহাজির ছিলেন। উল্টে তৃণমূলে আট সদস্য ছাড়াও প্রধানের সমর্থনে রয়েছে বিজেপি ও কংগ্রেসের একজন করে সদস্য। ফলে বোর্ড তৃণমূলের দখলেই থেকে যায়।অনাস্থা ডেকেও কেন অনাস্থাকারীরা তলবি সভায় গরহাজির থাকলেন তা নিয়ে এলাকায় কৌতুহল তৈরি হয়েছে। এদিন অনাস্থার তলবি সভা থাকায় মালতিপুরে হাজির ছিলেন জেলা তৃণমূল সভাপতি রহিম বক্সী স্থানীয় জেলাপরিষদ সদস্য রফিকুল হোসেন ও চাঁচল-২ নং ব্লক তৃণমূল কমিটির সভাপতি হাবিবুর রহমান।নির্বিঘ্নে তলবি সভা সম্পন্ন হয়েছে পুলিশ ও প্রশাসন দাবি করেছে।
প্রশাসন সূত্রে খবর,চাঁচল-২ নং ব্লকের সাতটি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে তৃণমূল পরিচালিত জালালপুর,ক্ষেমপুর,মালতিপুর ও বিজেপি পরিচালিত গৌরহন্ড পঞ্চায়েতে তলবি সভা ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে।
মালদা জেলা তৃণমূল কমিটির সভাপতি আব্দুর রহিম বক্সি বলেন,যারা তৃণমূল সুপ্রিমোর আদর্শ মেনে কাজ করে তারা কোনোদিনো দলের বিরুদ্ধে কাজ করবে না।মালতিপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে বিজেপি,কংগ্রেস ও সিপিআইএমের কতিপয় সদস্য তৃণমূলের বোর্ড ভাঙার চেষ্টা করেছিল।তবে তারা পারেনি আর পারবেও না।প্রধান ও উপপ্রধান দূর্নীতি গ্রস্থ থাকলে বাকি সদস্যরাও সরব হত।তবে তা করেননি।তারা তৃণমূলের সাথেই রয়েছে।দলের দুই সদস্য বিরোধীদের পক্ষ নেওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা মালতীপুরের বিধায়ক আব্দুর রহিম বক্সি।এবারও উন্নয়নে গা ভাসবে মালতিপুর গ্রাম পঞ্চায়েত বলে দাবি বকসির।
তৃণমূলের স্থানীয় জেলা পরিষদ সদস্য রফিকুল হোসেন জানান,চাঁচল-২ নং ব্লকের সাতটি গ্রাম পঞ্চায়েতই তৃণমূলের দখলে রয়েছে।
এর আগের তলবি সভায় গৌরহন্ড গ্রাম পঞ্চায়েতে বিজেপিকে অপসারিত করে আমরা দখল নিয়েছি।মানুষ তৃণমূলকেই চাইছে।
বিজেপি শাখার মালদা জেলা যুব মোর্চার সহসভাপতি সুমিত সরকার কটাক্ষ করে বলেন,তৃণমূল পরিচালিত বোর্ড গুলি দূর্ণিতী গ্রস্থ হওয়ায় দলেরই একাংশ অনাস্থা আনছে।শাসকদলের উপর থেকে নীচ সবটাই কাটমানির সংস্কৃতির সাথে আবদ্ধ।আর মিথ্যে মামলার ভয় দেখিয়ে ও টাকার প্রলোভন দেখিয়ে বিজেপির সদস্যদের কেনা হচ্ছে।বিজেপি সদস্যরা যারা তৃণমূল সাথে হাত মেলাচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে নালিশ জানানো হবে শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে বলে জানিয়েছে বিজেপি।
চাঁচল-২ নং ব্লকের বিডিও দিব্যজ্যোতি দাস জানিয়েছেন,মালতিপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বেশ কিছু সদস্য অনাস্থার আবেদন করেছিল।দিনক্ষন হিসেবে তলবিসভায় প্রিসাইডিং অফিসার হাজির হলেও নির্ধারিত সময় পর্যন্ত কোনো সদস্যই আসেননি।তাই অনাস্থা খারিজ হয়।ফলে পঞ্চায়েতের প্রধান ও উপপ্রধান স্বপদেই বহাল থাকলো জানিয়েছেন বিডিও।