দুই দলের কাউন্টার পলিটিক্সের মাঝত হাঁটুয়া ভাঙা দ’ আইডেন্টিটি পলিটিক্স
ক্ষীরোদা রায়
উদয়ন গুহ’র মন্তব্য ঘিরি উত্তপ্ত সোশ্যাল মিডিয়া। ব্যাগল রাইজ্যের দাবি করিলে হাটুয়া ভাঙি দেওয়া হবে, মন্তব্য দিনহাটার বিধায়কের। মন্তব্যের লক্ষ্য ব্যাগল রাইজ্যের আন্দোলনকারী কোচ রাজবংশী বা কামতাপুরী জনসমাজ মনে হৈলেও আসলে উদয়নের লক্ষ্য বিজেপি। ভ্যাকেরা পাখে, বিজেপির ব্যাগল রাইজ্য তৈরির প্রতিশ্রুতির বিরুদ্ধে উদয়ন! কারণ বিজেপি ব্যাগল রাইজ্যের প্রতিশ্রুতির বিনিময়ে রাজবংশী ভোট অমার পাখে টানি নিগির কৌশল হৈল্ বারবার ব্যাগল রাইজ্যের দাবি তুলি রাজনীতির খলতো গরম করি তুলা। অনেকে মনে করেন, চুপচাপ ভাবে অতি উদারীকরণ আর বেসরকারিকরণ প্রক্রিয়াক আগে নিগি থুবার বাদে ধর্ম, জাতপাতের রাজনীতি একটা হাতিয়ার। বাস্তবে ব্যাগল রাইজ্য আর ভাষার দাবি পূরণের ভাবনাত দিল্লী বহুত দূর। মাঝে মাঝে দুই একজন ভাষা আর রাইজ্যের দাবিক ইস্যু হিসাবে তুলিবে আর কাহো ঠিক ইয়ার বিরোধীতা করি মাঠ’ত নামিবে ইস্যু জিয়া থুবে বেসরকারিকরণ বা সরকারি ক্ষেত্র’ত নিয়োগের ব্যার্থতার মূল ইস্যু থাকি মানষির নজর ঘুরি দিবার বাদে। ভাষা আর রাইজ্যের দাবিক যদি মান্যতা দেওয়ার রাজনীতি করির দরকার হয় তাহলে উদয়নের বিরুদ্ধে নাহয়, ভাষা আর রাইজ্যের দাবিত আন্দোলন শুরু হবার দরকার সেই নেতানেত্রীলার প্রতি যায় দায়িত্বশীল পদ’ত থাকি ইস্যু তৈরি করি হাত গুটি নিয়া বসি আছে।
ব্যাগল রাজ্যের দাবি নিয়া বিজেপি নেতা গিলার মধ্যে পত্থম দাবি তুলেন বিজেপি সাংসদ জন বার্লা। কিন্তু মন্ত্রীত্ব পাওয়ার পরে উমার মুখবন্ধ হয়া গেইসে। অইন্যপাকে গোর্খাল্যান্ড রাজ্যের ইস্যু নিয়া বিমল গুরুঙ এর জনমুক্তি মোর্চাক মেলাদিন ব্যবহার করিসে বিজেপি। একেভাবে ২০০৯ আরহ ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনত কামতাপুরি ভাষার সাংবিধানিক স্বীকৃতির প্রতিশ্রুতি দিয়া কামতাপুর প্রোগ্রেসিভ পার্টি’র সমর্থন আদায় করে। পৃথক গ্রেটার রাজ্যের আশ্বাস দিয়া গ্রেটার নেতা অনন্ত মহারাজেরও সমর্থন পাইসে মেলা দিন থাকি। যদিও আজি অব্দি কুনোটার ক্ষেত্রেই প্রতিশ্রুতি পালন করে নাই বিজেপি সরকার।
ব্যাগল রাইজ্যের দাবি নিয়া মালতী রাভা রায় যে বক্তব্য প্রদান করিসে তার পর উদয়ন গুহ ঠ্যাং ভাঙি দেওয়ার হুমকি দেয়। কিন্তু যে বিষয়টাত ধ্যান দেওয়া দরকার তা হৈল্ মালতীর বক্তব্যের পর বিজেপির কোন নেতানেত্রী ব্যাগল রাইজ্যের প্রসঙ্গ যেমন তুলে নাই তেমনি উদয়ন গুহের মন্তব্যের বিরুদ্ধে দল কোন ব্যবস্থাও নেয় নাই এ পর্যন্ত। দল ব্যবস্থা নেয় নাই, কারণ উদয়ন বিজেপির নেতানেত্রীর বিরুদ্ধে ঠ্যাং ভাঙার হুঁশিয়ারি দেয়।
মজার বিষয় হৈল্ দুই বড় দলের দুই নেতানেত্রীর উস্কানিমূলক বক্তব্য ঘিরি সোশ্যাল মিডিয়াত ঝড় উঠিসে ব্যাগল রাইজ্যের দাবি জানেয়া আর উদয়ন গুহের বক্তব্যের বিরুদ্ধে। উত্তরবঙ্গের কোচ রাজবংশী বা কামতাপুরী জনগণের আবেগ ব্যাগল রাইজ্য আর ভাষার স্বীকৃতি। অনেকে মনে করেছেন উদয়ন গুহ উত্তরবঙ্গের কোচ রাজবংশী, কামতাপুরী সমাজের মানষির হকের দাবির বিরুদ্ধে এতবড় হিম্মত দেখাইল, হাঁটুয়া ভাঙি দিবে! কিন্তু বাস্তব তো অইন্য কথা কছে, উদয়ন গুহ জনপ্রতিনিধি, একটা রাজনৈতিক দলের সদস্য। মালতী রাভা রায় নিজেও অইন্য একটা দলের নেত্রী। একটা দলের নেত্রী হিসাবে ব্যাগল রাইজ্যের দাবি জানেবার পর অইন্য দলের একজন নেতা তার পাল্টা প্রতিরোধ জানাটায় স্বাভাবিক। কিন্তু উত্তরবঙ্গের কোচ রাজবংশী বা কামতাপুরী সমাজের মানষি ধরি নিল্ মালতী রাভা রায় কোচ রাজবংশী জনগোষ্ঠীর একজন, উমুরা ব্যাগল রাইজ্যের দাবি জানাইসে বা দাবি জানেবারে পারে; কিন্তু উদয়ন একজন বহিরাগত হয়া এত সাহস দেখায় ব্যাগল রাইজ্যের দাবি জানাইলে ঠ্যাং ভাঙি দেওয়ার হুমকি দেয়? ঠিকে তো, উদয়নের এতবড় সাহস ঠ্যাং ভাঙি দিবে! আইডেন্টিটি পলিটিক্সের সাথত জড়িত সগারে মাথাত থুবার নাগিবে, মালতী রাভা রায় পরিচিতির দিক দিয়া কোচ রাজবংশী হইলেও, রাজনৈতিক পরিচয়ে একটা বৃহত্তর দলের নেত্রী। দলের নেত্রী হিসাবে তার বক্তব্য দল অনুমোদন করিসে কিনা তার কোন তথ্য এ পর্যন্ত জানা যায় নাই। মালতী রাভা রায় উত্তরবঙ্গের কোচ রাজবংশী বা কামতাপুরী আইডেন্টিটি নিয়া কুনো রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিল না। ফলে মালতী রাভা রায়ের বক্তব্যক বিজেপি নেত্রীর বক্তব্য হিসাবে ধরি নেওয়া যায়। সেই কারণে বিজেপি নেত্রীর বক্তব্যের বিরুদ্ধে উদয়ন গুহের বক্তব্য আসলে কাউন্টার পলিটিক্সের নীতি।
দুই দলের কাউন্টার পলিটিক্সের মাঝ’ত কোচ রাজবংশী বা কামতাপুরী আইডেন্টিটি নিয়া হৈ চৈ উঠিসে আসলে এইটাও বাজারের হাওয়া গরম করা একটা আবেগ। এই আবেগের ঢেউ উঠিবে, ধীরে ধীরে ঢেউ দমিবে বা দমে দেওয়া হবে।আইডেন্টিটি পলিটিক্সের সাথত জড়িত নেতানেত্রীলা এই মুহূর্তে স্যান্ডউইচের মত অবস্থা হয়া আছে। কার পাখে যাবে আর কাক সমর্থন করিবে উমুরাও দিশাহীন। আসলে দিশাহীন এই কারণে, কোচ রাজবংশী বা কামতাপুরী সমাজের অনেকেই এই দুই বৃহত্তর দলের সদস্য। দুই দলের দুই নেতানেত্রী যেভাবে বক্তব্য প্রদান করিলেন আর দুই দলের কোচ রাজবংশী বা কামতাপুরী সমাজের নেতার ঘর মুখ মুঞ্জি চুপ করি আছেন, দেখিলে একটা বিষয়ে ধারণা করা যায়- চুপচাপ থাকি বিষয়টাক হয় অনুমোদন দিসেন যে, একপক্ষ দাবি তুলিবে অইন্য পক্ষ বিরোধীতা করিবে। কিন্তু রাইজ্য ভাগ হবেনা।
তবে, ব্যাপারটা হৈল্, আইডেন্টিটি পলিটিক্সের সাথত জড়িত নেতানেত্রীর ঘরের চুপ থাকার বিষয়টা। এক. যেহেতু দুইটা বড় দলের নেত্রী আর নেতার বক্তব্য ঘিরি রাজনৈতিক লড়াই সেই কারণে চুপ আর দুই. দুইটা বড় দলের ভিতর’ত কোচ রাজবংশী বা কামতাপুরী সমাজের বহু সাধারণ সমর্থক আছে যায় ঐ দুই নেতানেত্রীর বক্তব্য নিয়া চুপচাপ হয়া দুইটা ভিন মেরুর বাসিন্দা হয়া আছে। ফলে, আইডেন্টিটি পলিটিক্সের পাখে কতটা জনসমর্থন আছে তা কিন্তু বুঝা যাছেনা। সামান্য কিছু অংশ মানষি উদয়নের বিরুদ্ধে আন্দোলন করির আগাইলেও সেই মানষিলাক যে সমানতালে বিজেপির কাছ’ত ব্যাগল রাইজ্যের দাবিটাও জানেবার দরকার তা কিন্তু দেখা যাছেনা। ফলে এই আন্দোলন ধীরে ধীরে তৃণমূল বিরোধী আন্দোলন হিসেবে পরিচিত হবে রাইজ্য সরকারের চোখুত। এইভাবে হাঁটুয়া ভাঙা দ’ হবে কোচ রাজবংশী বা কামতাপুরী আইডেন্টিটি পলিটিক্সের সাথ’ত জড়িত মানষি গিলা।