নিখোঁজ শিক্ষক,হতাশ পরিবার
নিউজ ডেস্ক, আলিপুরদুয়ার: নিখোঁজ শিক্ষকের হদিস পেতে বর্তমান ও প্রাক্তন ছাত্রছাত্রীরা সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করছেন। স্বামীকে ফিরে পেতে প্রশাসনের কাছে অনুরোধ জানিয়েছেন নিখোঁজ শিক্ষক বিশ্বজিৎ রায়ের স্ত্রী লিপি রায়। সাতদিন পেরিয়ে গেলেও সোনাপুর বিকে হাই স্কুলের কম্পিউটার শিক্ষক বিশ্বজিৎ রায়ের কোন সন্ধান পাওয়া যায়নি। নিখোঁজ শিক্ষকের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছেন আলিপুরদুয়ার জেলা পরিষদের সহ সভাধিপতি মনোরঞ্জন দে, তিনি প্রশাসনের ওপর আস্থা রাখতে বলেছেন। তবে তারপরেও খোঁজ মেলেনি বিশ্বজিৎ রায়ের।
ঘটনার এক সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও এখনও পর্যন্ত বিশ্বজিৎ রায়ের কোন সন্ধান মেলেনি। বিদ্যালয় এসে সেখান থেকে কোচবিহারে যাবার উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হয়ে তিনি কর্মস্থলে না গিয়ে সোনাপুর চৌপথীতে আসেন। সেখান থেকেই নিখোঁজ তিনি। আলিপুরদুয়ার ১ ব্লকের চকোয়াক্ষেতি অঞ্চলের কুমার পাড়া এলাকায় বাড়ি। বাড়ি থেকে বিদ্যালয়ে যাতায়াত করেন চকোয়াক্ষেতি অঞ্চল মোড় তথা খয়েরবাড়ি বাজার হয়ে সোনাপুর কলোনি দিয়ে। কিন্তু সেইদিন তিনি সোনাপুর কলোনি হয়ে স্কুলে না গিয়ে সোনাপুর চৌপথীতে যান। সোনাপুর চৌপথী থেকেই তার আর খোঁজ মেলেনি। দিনের আলোয় একজন ব্যক্তির নিখোঁজ হবার ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়ায় এলাকায়। তবে, বিদ্যালয়ে না গিয়ে কেন তিনি সোনাপুর চৌপথী আসেন এই প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে স্থানীয়দের মনে। কিভাবেই বা তিনি নিখোঁজ হলেন সেখান থেকে মালুম করতে পারছেন না স্থানীয়রা। পাশেই সোনাপুর পুলিশ ফাঁড়ি রয়েছে। দিনের বেলা লোকের ভিড় থাকে সোনাপুর চৌপথীতে। একজন সচেতন ব্যক্তির রহস্যজনক ভাবে নিখোঁজ হবার ঘটনায় নানা আশঙ্কা তৈরি হয়েছে সচেতন নাগরিক মহলে।
উল্লেখ্য, আলিপুরদুয়ার জেলার জয়গাঁ থানার এএসআই রতন করের রহস্যজনক নিখোঁজের পাঁচদিন পর তার মৃতদেহ উদ্ধার হয় চা বাগানের পাশে সড়কের ধারে একটি নালা থেকে। এ মাসের ১৪ তারিখ সোনাপুর থেকে দুই কিমি দূরে বাবুরহাট এলাকায় বাড়ি পূজা রায় নামের একাদশ শ্রেণীর এক ছাত্রীও নিখোঁজ হয়। পাঁচকেলগুড়ি প্রমোদিনী উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রী সে। একের পর এক নিখোঁজের ঘটনায় চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে। অন্যদিকে জেলার শ্রীনাথপুর চা বাগান থেকে এক যুবতী নিখোঁজ হয় গত ১৮ তারিখ। পুলিশের ওপর আস্থা থাকলেও সাধারণ মানুষ নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তিত। সোনাপুর বিকে হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক রঞ্জিত ঠাকুর বলেন, বিদ্যালয়ে আসার জন্য তিনি বাড়ি থেকে বের হন, বিদ্যালয় থেকে তিনি কোচবিহারে যাবেন এটাই পরিবারের সদস্যদের জানান। কিন্তু তিনি বিদ্যালয়ে আসেননি। প্রশাসনের কাছে আবেদন যাতে খুব তাড়াতাড়ি তাকে উদ্ধার করা যায়। আলিপুরদুয়ার জেলা পরিষদের সহ সভাধিপতি মনোরঞ্জন দে বলেন, পুলিশের ওপর আস্থা রাখতে হবে, আশাকরি খুব তাড়াতাড়ি বিশ্বজিৎ বাবুকে উদ্ধার করা যাবে। এলাকায় তিনি ভদ্র ও সজ্জন ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত।
নিখোঁজ শিক্ষকের স্ত্রী লিপি রায় কাতর আর্জী জানিয়েছেন তার স্বামীকে যাতে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করা যায়। প্রাক্তন ছাত্রছাত্রীরাও নিখোঁজ শিক্ষককে খুঁজে পেতে ফেসবুকে পোস্ট করছেন। রুপন দাস নামের এক প্রাক্তন ছাত্র বিশ্বজিৎ রায়কে কোচবিহারের শ্যুটিং ক্যাম্প এলাকায় দেখতে পেয়েছেন বলে ফেসবুকে পোস্ট করেছেন। তাদের দাবি যেকোন ভাবেই হোক উদ্ধার করতে হবে শিক্ষক বিশ্বজিৎ রায়কে।