পাঁচদিন আগে রহস্যজনক ভাবে নিখোঁজ এএসআই রতন করের মৃতদেহ উদ্ধার
ক্ষীরোদা রায়, আলিপুরদুয়ারঃ রহস্যজনক ভাবে নিখোঁজ জয়গাঁ থানার পুলিশ অফিসার রতন করের মৃতদেহ উদ্ধার হল রবিবার সকালে। কালচিনির দলসিংপাড়া ১০ নম্বর এলাকা থেকে। সড়কের ধারে নালার তলায় ঝোঁপ থেকে তার মরদেহ পাওয়া যায়। মৃতদেহের সঙ্গে পাওয়া গিয়েছে তার মোটরবাইক, হেলমেট ও ব্যাগ।
পাঁচদিন ধরে চিরুনী তল্লাশির পরেও পুলিশ অক্ষত অবস্থায় ঐ পুলিশ অফিসারের দেহ উদ্ধার করতে না পারায় ক্ষোভ তৈরি হয়েছে তার পরিবারের ভেতর। অভিযোগ মৃত এএসআই রতন করের পরিবারের কাছেও তথ্য গোপণ করেছে পুলিশ। মৃত পুলিশ অফিসারের ভাই তাপস করের অভিযোগ, আজ সকালে আমাদের জানানো হয় দাদার লাশ পাওয়া গিয়েছে, ঘটনা দেখে অনেক কিছুই মনে হচ্ছে, এখনই কিছু বলব না। রতন করের কন্যা ও স্ত্রী কান্নায় ভেঙে পড়েছেন। তার কন্যা অভিযোগ তুলেছেন, বাবাকে খুন করা হয়েছে। তবে পাঁচদিন ধরে যেভাবে তল্লাশি চালানো হয়েছে তারপরেও সেই পুলিশ অফিসারের নিখোঁজের কিনারা করতে না পারায় পুলিশের ভূমিকায় ক্ষোভ ঝেড়ে দিয়েছেন অনেকেই। আলিপুরদুয়ারের বিধায়ক সুমন কাঞ্জিলাল জেলার আইনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা নিয় প্রশ্ন তুলে বলেন, শাসক দলের তাবেদারি করতে গিয়ে পুলিশ নিজে নিরাপদ নয়, সেখানে সাধারণ মানুষ কিভাবে নিরাপদে বাস করবে? তিনি মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন।
আলিপুরদুয়ার জেলার জয়গাঁ থানায় ট্রাফিক ইন্সপেক্টর হিসেবে কর্মরত ছিলেন রতন কর। দুই সন্তান সহ স্ত্রী কোচবিহারে থাকেন। জয়গাঁতে পুলিশ আবাসনে তিনি একাই থাকতেন। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বুধবার জয়গাঁ থানা থেকে হাসিমারায় নিজের ডিউটির উদ্দেশ্যে বের হন এএসআই রতন কর। নিজের মোটরবাইক করে তিনি থানা থেকে ডিউটিতে যোগ দিতে যাচ্ছিলেন। কিন্তু ডিউটি থেকে ফিরেননি তিনি। পরিবারের পক্ষ থেকে নিখোঁজের অভিযোগ দায়ের করা হয়। তাকে খুঁজতে তদন্তকারি দল তৈরি করে আলিপুরদুয়ার জেলা পুলিশ। বৃহস্পতিবার তার মোবাইলের টাওয়ার লোকেশন দেখায় তিনি মাদারিহাট সংলগ্ন জলদাপাড়া বনাঞ্চলের ভিতর রয়েছেন। পুলিশ কুনকি হাতি নিয়ে জঙ্গলের ভেতর তল্লাশি চালায়। কিন্তু নিখোঁজ পুলিশ অফিসারের কুলকিনারা খুঁজে পায়নি তদন্তকারী পুলিশের দল। ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য তৈরি হয়।
ঘটনার চারদিন পার হবার পরেও তার হদিস পায়নি পুলিশ। রবিবার সকাল নাগাদ কালচিনির দলসিংপাড়া ১০ নম্বর এলাকায় রতন করের মৃতদেহ উদ্ধার হয়। সড়কের ধারে নালার ঝোঁপের ভেতর থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। সেখানেই পাওয়া যায় তার মোটরবাইক। আলিপুরদুয়ারের এসপি ভোলানাথ পাণ্ডে বলেন, বিশেষজ্ঞদের দিয়ে ময়নাতদন্ত করা হবে, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পেলে দ্রুত তদন্ত করা হবে। সমস্ত দিক খতিয়ে দেখে তদন্ত করা হবে।