বাবা ছিলেন বিধায়ক, এমনকি শাশুড়ি মা’ও, কামতাপুরী মহাজোটের প্রার্থী নির্মল কুজুর লালিত হয়েছেন বামপন্থী ঘরে

ক্ষীরোদা রায়, মাদারিহাট: বাবা ছিলেন চার বারের বিধায়ক। এমনকি শাশুড়ি মা’ও ছিলেন তিন বারের বিধায়ক। জন্ম ও বেড়ে ওঠা একেবারে বামপন্থী পরিবারে। বামপন্থা ছেড়ে তিনি এখন কামতাপুরী মহাজোট সমর্থিত প্রোগ্রেসিভ পিপলস পার্টির বিধায়ক পদপ্রার্থী। তিনি আলিপুরদুয়ার জেলার মাদারিহাট-বীরপাড়া বিধানসভা কেন্দ্রের পিপিএ প্রার্থী নির্মল কুজুর। মাদারিহাটের হান্টাপাড়া চা বাগানে বাড়ি। মাদারিহাটের চারবারের বিধায়ক সুশীল কুজুরের পুত্র ও তিনবারের বিধায়ক কুমারী কুজুরের জামাতা নির্মল কুজুর।

১৯৮২ সালে সুশীল কুজুর বামফ্রন্ট সমর্থিত আরএসপি দল থেকে বিধায়ক নির্বাচিত হয়েছিলেন। টানা চার বার বিধায়ক ছিলেন সুশীল বাবু। ১৯৯৬ সালের পর শারীরিক অসুস্থতার কারণে বিধানসভা ভোটে দাঁড়াননি তিনি। ২০০১ সালে তাঁর জায়গায় প্রার্থী হলেন কুমারী কুজুর। চা-বলয়ের জনপ্রিয় নেত্রী ছিলেন তিনি। বাগানের মহল্লার প্রায় সকলেই চিনতেন তাঁকে। এখনও কুমারী কুজুরের কথা লোকমুখে। কুমারী কুজুরের জ্যেষ্ঠ কন্যাকে বিয়ে করেছেন সুশীল কুজুরের পুত্র নির্মল কুজুর। নির্মল এখন কামতাপুরী মহাজোট সমর্থিত প্রোগ্রেসিভ পিপলস পার্টির বিধায়ক পদপ্রার্থী।মেঘালয়ের মুখ্যমন্ত্রী কনরাড সাংমা গত সপ্তাহে নাগরাকাটায় দলীয় সভায় যোগ দিতে আসেন। সেখানে তিনি উত্তরবঙ্গকে উত্তর পূর্ব ভারতের সাথে যোগ করার দাবি জানানোর সাথে ঘোষণা করেন উত্তরবঙ্গের সব আসনে প্রার্থী দেবে পিপিএ। অন্যদিকে আলোচনা চলছে উত্তরবঙ্গের ভূমিপুত্র মানুষের বিভিন্ন সংগঠন কামতাপুর পিপলস পার্টি (ইউনাইটেড) এর নেতৃত্বে মহাজোট বেঁধে নির্বাচনে লড়বে। পরে সেই জোটের শরিক হয় পিপিএ। আদিবাসীদের জন্য সংরক্ষিত সব আসনে প্রার্থী দেয় পিপিএ। মাদারিহাট-বীরপাড়া বিধানসভা কেন্দ্রে প্রার্থী হিসেবে নির্মল কুজুরের সাথে আলোচনা চলে। আলোচনা ফলপ্রসূ হওয়ায় নির্মলকে প্রার্থী হিসেবে দাঁড় করানোর সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়। নির্মল জানালেন, “এবার আলিপুরদুয়ারের তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী অন্য বিধানসভা কেন্দ্র থেকে এসে এখানে দাঁড়িয়েছেন, বিজেপির প্রার্থী তথা পূর্ব বিধায়ক মনোজ টিগ্গা ব্যক্তি হিসেবে ভালো হলেও এই পাঁচ বছরে সেই অর্থে কিছুই করতে পারেননি। আদিবাসী সমাজের সাধারণ মানুষ চাইছিল আমি প্রার্থী হই, বামফ্রন্ট এখানে শক্তিহীন। সবাই চাইছিল নিরপেক্ষ নতুন একটি ছায়ায় থেকে নির্বাচনে লড়াই করি।” ভোটে দাঁড়ানোর কাজটি সহজ ছিল না। পূর্বতন বিধায়ক বাবা বেঁচে না থাকলেও প্রাক্তন বিধায়ক শাশুড়ি মা জামাইয়ের কাজে বাঁধা হয়ে দাঁড়াননি। শাশুড়ি মা প্রাক্তন বিধায়ক কুমারী কুজুর জামাইকে অভিনন্দন জানিয়ে আশীর্বাদ করেছেন জয়ী হওয়ার জন্য।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *