বিয়ে বাড়িতে শোকের ছায়া, আনন্দ থেকে বিষাদময় পরিবেশ, নববধুকে জানানো হয়নি দূর্ঘটনার কথা

সুব্রত রায়, ধূপগুড়ি: ধূপগুড়িতে মর্মান্তিক পথ দূর্ঘটনা, বিয়ে বাড়িতে শোকের ছায়া। আনন্দ যখন বিষাদে পরিণত। মঙ্গলবার ধূপগুড়ি ময়নাতলি এলাকার ভট্টপাড়ায় বৌভাতের দিন আয়োজন তখন সম্পূর্ণ। মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর থেকেই ডিজের তালে নাচ থেকে শুরু করে, খাওয়ার প্যান্ডেলে ভিড় সবকিছুই ঠিকঠাক চলছিল। নববধূ তখন সেজেগুজে বাড়ির সদস্যদের লোকজনের আসার অপেক্ষায়। সাড়ে নয়টা নাগাদ বৌভাতের দুটি গাড়ি প্রবেশ করল বিয়ে বাড়িতে। তবে দুঃসংবাদ ও চোখে মুখে আতংকের ছাপ সাথে নিয়ে । হঠাৎ বন্ধ হয়ে গেল ডিজে, বন্ধ হয়ে গেল খাওয়া দাওয়া। তখন নিস্তব্ধ বিয়েবাড়ি, অনেকেই তখন জানতে চাইছেন ঠিক কি হয়েছে। কিন্তু বলার ভাষা হারিয়ে ফেলেছেন তখন সকলেই। হুড়োহুড়ি পরে গেল রাস্তার দিকে যাওয়ার জন্য। এদিকে ততক্ষণে সবাই জেনে গেছে পাঁচটি গাড়ি বৌভাতের উদ্দেশ্য রওনা দিয়েছিল। যার তিনটি গাড়ি পাথর বোঝাই ডাম্পারের নীচে চাপা পড়েছে। দূর্ঘটনাস্থলে উদ্ধারকাজে হাত লাগিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা সহ পুলিশ ও দমকল বাহিনীর কর্মীরা। বিয়ে বাড়িতে আসতে থাকে একের পর এক মৃত্যু সংবাদ। তখন নববধূকে সামাল দিতে রীতিমতো হিমসিম বরের বাড়ির সদস্যরা। কারণ মৃতরা প্রত্যেকেই নববধূর আপনজন। মূহুর্তেই বিয়ে বাড়িতে নিস্তবতা ও শোকের ছায়া নেমে আসে। তবে নববধূকে দূর্ঘটনায় মৃতদের সম্পর্কে জানানো হয়নি। বিয়েবাড়িতে থাকা সুকেশ রায় জানান,” আমরা সবাই বিয়েতে ব্যস্ত ছিলাম। তখন কনে যাত্রীদের দুটি গাড়ি এসে দূর্ঘটনার খবর জানায়। এখনও পর্যন্ত আমরা নববধূকে তার আপনজনদের মৃত্যুর খবর জানাইনি।” রীতিমতো শোক ও কান্না ভেজা গলায় বর বিকাশ রায় জানান,” প্রত্যেকেই আমার শ্বশুরবাড়ির লোকজন। দূর্ঘটনার খবর পাওয়া মাত্র আমরা ঘটনাস্থলে ছুটে যাই। তখন বিয়েবাড়ির থেকে লোকজন না খেয়ে চলে যাচ্ছিল। মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়েছে নববধূ।”উল্লেখ্য গতকাল রাত নয়টায় বিয়েবাড়িতে যাওয়ার পথেই বিয়েবাড়ি থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে দূর্ঘটনার কবলে পড়ে তিনটি গাড়ি। দূর্ঘটনায় ইতিমধ্যেই মৃত্যু হয়েছে ১৪ জনের। এদিকে দূর্ঘটনায় ইতিমধ্যেই টুইট করে শোকপ্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী ও মূখ্যমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী মৃতদের পরিবারের সদস্যদের প্রতি ২ লাখ টাকা ও আহতদের ৫০ হাজার টাকা করে দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন। অন্যদিকে মূখ্যমন্ত্রী মৃতদের পরিবারের সদস্যদের প্রতি ২.৫০ লাখ টাকা, আহতদের ৫০ হাজার টাকা ও অল্প আহতদের ২৫ হাজার টাকা করে দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন।