ভোরের আলো ফোটার আগে পুজো সেরে প্রতিমা বিসর্জন

অপু দেবনাথ , হলদিবাড়ি:কোচবিহার জেলার হলদিবাড়ি ব্লকের উত্তর বড় হলদিবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের কাশিয়াবাড়ির দেবী চৌধুরানী কালীমন্দিরের কালী প্রতিমা সূর্যের মুখ কোনোদিন দেখেনি। সূর্য অস্ত যাওয়ার পরে শুরু হয় প্রতিমা তৈরি, একই ভাবে সূর্য ওঠার আগেই পুজো শেষ করে প্রতিমা বিসর্জন দেওয়ার রীতি এখানে বহু পুরাতন। শতবর্ষ প্রাচীন এই পুজোকে ঘিরে উদ্যোক্তাদের প্রস্তুতি জোরকদমে । বাসিন্দারা জানান, আগে কাঁচা মন্দিরেই পুজো হত, কয়েকবৎসর পূর্বে মন্দিরটি পাকা করা হলেও বর্তমানে তার অবস্থা একেবারে বেহাল। লোককথা অনুযায়ী, একসময় এই জায়গা গভীর বনজঙ্গলে ঘেরা ছিল, বহুদূর পর্যন্ত কোন জনবসতি ছিল না । অতীতে তিস্তা নদী এই মন্দিরের পাশেই অবস্থান করতো, এই নদীর গতিপথ ধরে দেবী চৌধুরানী ও ভবানী পাঠক উত্তরবঙ্গের বিস্তীর্ণ এলাকায় দাপিয়ে বেড়াতেন । অধুনা বাংলাদেশে যাওয়ার পূর্বে এই মন্দিরেই দেবীর আরাধনা করতেন তারা । রাজ আমলে মন্দিরটি পাকা করা হয় । তখন রাজ পরিবারের সদস্যদের তত্ত্বাবধানেই মন্দিরের পুজোর আয়োজন হত, এখন স্থানীয় বাসিন্দারাই এই পুজোর হাল ধরেছেন। এই মন্দিরে পুজোর সূচনা হয়েছিল স্বয়ং দেবী চৌধুরানী ও ভবানী পাঠকের হাতে । স্থানীয় বাসিন্দা সুনীল রায় জানান রাজা আমলে তহসিলদাররাই পুজোর দায়িত্ব সামলাতেন । তখন গরুর গাড়িতে পুজোর আগে আসতো কালী মায়ের স্বর্ণালঙ্কার ও ভোগ রান্নার সরঞ্জাম । কালের বিবর্তনে এখন সেসব ইতিহাস। তবে বর্তমানে মন্দিরটির অবস্থা একেবারে বেহালে সরকারি ভাবে মন্দির সংস্কারের দাবি তুললেন এলাকার বাসিন্দারা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *