ময়রাডাঙ্গার বিপুল বর্মন সরকারি সহায়তা ছাড়াই উত্তরবঙ্গের ইতিহাস সংরক্ষনে গড়েছেন ডুয়ার্স মিউজিয়াম

Uploader: Kshiroda Roy

নিজস্ব সংবাদদাতা, ফালাকাটা: করোনা অতিমারির কারণে বন্ধ রয়েছে প্রত্যন্ত গ্রামের যুবক বিপুল বর্মনের নিজস্ব উদ্যোগে তৈরি জাদুঘর। উত্তরবঙ্গের প্রাচীন জনসমাজের ঐতিহ্যবাহী ব্যবহার্য বহু সরঞ্জাম সেই জাদুঘরে দর্শনার্থীদের জন্য যত্ন করে সংগ্রহ করে রেখেছেন ফালাকাটা ব্লকের ময়রাডাঙ্গা গ্রাম পঞ্চায়েতের সাত পুকুরিয়া গ্রামের যুবক বিপুল বর্মন। পেশায় অঙ্কন শিল্পী, নেশায় ভাওয়াইয়া শিল্পী বিপুল ঢোল বাজাতে পারেন। পেশা ও নেশার ফাঁকে বিপুল উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জায়গা থেকে সংগ্রহ করেছেন ঐতিহ্যবাহী বহু সরঞ্জাম। শুধু তাই নয় পূর্ব এবং উত্তর-পূর্ব ভারতের নানান প্রজাতির ধান ছিল বিপুলের জাদুঘরে। তবে হাতির আক্রমণে তার টিনের বেড়ার জাদুঘর ভেঙে হাতি খেয়ে যায় বিভিন্ন প্রজাতির মজুদ করা ধান। নাগাল্যান্ড, মনিপুর, ত্রিপুরা, আসাম, ওড়িশা সহ বিভিন্ন রাজ্যের বিভিন্ন প্রজাতির ধান সংগ্রহ করেছেন তিনি। খয়েরবাড়ি বন থেকে আসা হাতি সাবাড় করে দেয় সেই ধান।
উত্তরবঙ্গের প্রাচীন সমাজে মানুষের দৈনন্দিন জীবনে ব্যবহার করা বিভিন্ন যন্ত্রপাতি রয়েছে সেই জাদুঘরে। মোষের গাড়ির চাকা, ব্রিটিশ আমলের কাচের বোতল, মাছ ধরার জন্য বাঁশের তৈরি টেপাই, জার্কি, ধোরকা, চেলা, কুলো সহ আছে পুরনো আমলের ঘড়ি, বাবুই পাখির বাসা, প্রাচীন মূদ্রা।

ময়রার ডাঙ্গা গ্রাম পঞ্চায়েতের সাত পুকুরিয়া গ্রামের যুবক বিপুল জানালেন ব্লক ভাওয়াইয়া, রাজ্য ভাওইয়া সংগীত প্রতিযোগিতা ছাড়াও বহু অনুষ্ঠানে তিনি তার জাদুঘর নিয়ে গিয়েছেন। সেই অনুষ্ঠানগুলোতে বিধায়ক, মন্ত্রী, নেতা তাকে যেমন উৎসাহিত করেছেন তেমনি তার জাদুঘরের কলেবর বৃদ্ধি করার জন্য আশ্বাস দিয়েছেন সরকারি সাহায্যের‌। শুকনো কথায় যে চিড়ে ভেজে না আক্ষেপ বিপুলের। তাঁর কথায়, ব্যক্তিগত উদ্যোগে নিজের চেষ্টায় যতটা পারা যায় চালিয়ে যাবেন উত্তরবঙ্গের প্রাচীন সংস্কৃতি রক্ষায়। বিপুল বলেন করোনার কারণে আপাতত জাদুঘরের সমস্ত জিনিস গুছিয়ে রেখেছেন। এই মুহূর্তে কেউ আসছেন না জাদুঘরে। করোনা অতিমারির কারণে বন্ধ জাদুঘরে ধুলো জমা হয়েছে। সবকিছুকে পরিস্কার করতে করতে বিপুল তাঁর লক্ষ্যের কথা বলেন, করোনার প্রভাব কমলে আগামী দিনে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য তিনি এই কাজকে এগিয়ে নিয়ে যাবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *