রাজ আমলের কুয়ো পরিণত হয়েছে আবর্জনার স্তূপে
বিষ্ণুপদ রায়, হলদিবাড়ি: হলদিবাড়ি ব্লকের দেওয়ানগঞ্জ গ্ৰাম পঞ্চায়েতের অন্তগত দেওয়ানগঞ্জ বাজারে একটি রাজ আমলের কুয়োতে আবর্জনার স্তূপ।এই রাজ আমলের ঐতিহ্যবাহী কুয়োটি তৈরি হয়েছিল কোচবিহারের রাজা।এখন সেখানে আখের ছিবড়ে, খালি মদের বোতল, প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ থেকে শুরু করে বিভিন্ন ধরনের আবর্জনা দিয়ে ভর্তি হয়ে আছে কুয়োটি। রাজ আমলের ওই ঐতিহ্যবাহী কুয়োটির বেহাল দশা নিয়ে ক্ষুব্ধ স্থানীয় বাসিন্দারা।তাঁরা দাবি করেছে প্রশাসনের তরফে রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে জন্য কুয়োটির এই অবস্থা বলে অনেকের অভিযোগ।রাজ আমল থেকেই দেওয়ানগঞ্জ বাণিজ্যকেন্দ্র হিসেবে গড়ে উঠেছিল। কোচবিহারের অর্থনীতিতে এই বাণিজ্যকেন্দ্রের গুরুত্ব ছিল অপরিসীম। কৃষিপণ্যের মধ্যে ধান, পাট ও তামাক ছিল সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। বিভিন্ন জায়গা থেকে ব্যবসায়ীরা এই জনপদে আসতেন। ফলে প্রচুর মানুষের সমাগম হত। তাঁদের পানীয় জলের জোগান দিত ইটের তৈরি এই কুয়োটি। এলাকাবাসী জানিয়েছেন, বর্তমানে যে জায়গায় কুয়োটি রয়েছে, তার পাশেই ছিল রাজাদের অর্থে পরিচালিত একটি দাতব্য চিকিৎসালয়। সেটি মহারাজা নৃপেন্দ্রনারায়ণের আমলে তৈরি করা হয়। সেই দাতব্য চিকিৎসালয়ে রোগীদের পানীয় জলের পরিষেবা দিতেই এই কুয়োটি নির্মাণ করা হয়েছিল। সংস্কারের অভাবে ধ্বংসের পথে রাজ আমলের স্মৃতি বিজড়িত কুয়োটি দেখে এখন অনেকেই আক্ষেপ করেন। এখন সেটি জলে নয়, আবর্জনায় ভরে রয়েছে।এ বিষয়ে কোচবিহার হেরিটেজ সোসাইটির হলদিবাড়ি শাখার সম্পাদক নারায়ণচন্দ্র রায় জানান, হলদিবাড়ি ব্লকে বিভিন্ন স্থানে রয়েছে রাজ আমলের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ নিদর্শন। ঐতিহাসিক নিদর্শনগুলি সংস্কার ও সংরক্ষণ করার বিষয়ে একাধিকবার জেলা প্রশাসনের দ্বারস্থ হলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। যদিও এবিষয়ে দেওয়ানগঞ্জ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান ঝর্ণা রায়বসুনিয়া বলেন, রাজ আমলের স্মৃতিবিজড়িত ইটের তৈরি কুয়োটি সংস্কারের ব্যাপারে দ্রুত উদ্যোগ নেওয়া হবে। সাধারণ মানুষও এই ঐতিহ্য রক্ষার দাবি তুলেছেন।