রিভিউয়ের পর মাধ্যমিকের মেধা তালিকায় ষষ্ঠ স্থান পেল মালদার রোজা
শেখ সাদ্দাম হোসেন, হরিশ্চন্দ্রপুর: মাধ্যমিকের মেধা তালিকায় স্থান পেল রোজা পারভিন। মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরের চন্ডীপুর হাই স্কুল থেকে এবার মাধ্যমিক দিয়েছিল রোজা। কিন্তু ফল বের হওয়ার পর দেখা যায়, ৬৮১ পেয়েছে সে। মাত্র দু নম্বরের জন্য তালিকায় ঠাঁই পায়নি রোজা। কিন্তু ইংরেজি ও ইতিহাসে আরও বেশি নম্বর পাওয়ার আশা ছিল তার। তাই ওই দুটি বিষয়ে পর্ষদে রিভিউয়ের আবেদন জানিয়েছিল। বুধবার পর্ষদ সেই ফল প্রকাশ করেছে। ইংরেজি ও ইতিহাস দুটি বিষয়ে ৩ নম্বর করে বেড়ে তার মোট নম্বর দাঁড়িয়েছে ৬৮৭তে। পর্ষদ সূত্রে জানা গিয়েছে, নম্বর বেড়ে যাওয়ায় মেধা তালিকায় রাজ্যে ষষ্ঠ স্থান অধিকার করেছে রোজা। এছাড়া মালদহ জেলাতে তার প্রাপ্ত নম্বরই সর্বোচ্চ। রিভিউর পর রোজা মেধা তালিকায় স্থান পাওয়ায় তার স্কুল তো বটেই, মহকুমাজুড়েই খুশির আবহ তৈরি হয়েছে। কেননা কোনও শহরের স্কুল নয়, প্রত্যন্ত এলাকার চন্ডীপুর স্কুল থেকে কোনও পড়ুয়া রাজ্যে মেধা তালিকায় স্থান পাওয়া দূরের কথা, জেলাতেও প্রথম হয়নি।
এবার মাধ্যমিক পরীক্ষার ফল বের হওয়ার পর নম্বর দেখে কিছুটা মুষড়ে পড়েছিল রোজা। চাঁচল মহকুমায় প্রথম হওয়ায় তার বাড়িতে গিয়ে বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন, রাজনৈতিক দলের তরফে নেতারা গিয়ে শুভেচ্ছা জানিয়েছিলেন। কিন্তু মাত্র দু নম্বরের জন্য মেধা তালিকায় স্থান না মেলায় স্কুলের পাশাপাশি তার বাবা, মায়ের মনের মধ্যেও কিছুটা হলেও আফসোস ছিল। কিন্তু রিভিউর ফলাফল সবকিছু দূর করে দিয়েছে। রোজার প্রাপ্ত নম্বর বাংলায় ৯৬, ইংরেজিতে ৯৮, অঙ্কে, ৯৯, ভৌত বিজ্ঞানে ৯৮, জীবন বিজ্ঞানে ৯৮, ইতিহাসে ৯৯ ও ভূগোলে ৯৯।
রোজার বাড়ি চাঁচলের আদর্শপল্লীতে। বাবা আনসার আলি চন্ডীপুর স্কুলেই শিক্ষকতা করেন। মা মাসুমা পারভীন গৃহবধূ। বাবার সঙ্গেই প্রতিদিন বাইকে চেপে স্কুলে যেত রোজা। প্রতিদিন ছয় থেকে সাতঘন্টা পড়ত সে। বিগ্গান বিষয়ে বাবাও তাকে কিছুটা সাহায্য করতেন। উচ্চ মাধ্যমিকে চাঁচল সিদ্ধেশ্বরী ইনস্টিটিউশনে ভর্তি হয়েছে সে।
ভবিষ্যতে অ্যাস্ট্রোফিজিক্স নিয়ে পড়াশুনা করতে চায় রোজা। ছোটবেলা থেকেই মহাকাশ নিয়ে তার মাথায় ঘুরপাক খায় নানা ভাবনা। সময় পেলেই দূরবিন নিয়ে আকাশে তাকিয়ে থাকে সে। মহাকাশ বিষয়ে গবেষনাই তার জীবনের লক্ষ।
মেধা তালিকায় স্থান পাওয়ায় ভীষন খুশি রোজা। সে জানায়, এত কাছে গিয়েও দু নম্বরের জন্য তালিকায় জায়গা না পাওয়ায় মনটা খুব খারাপ হয়ে গিয়েছিল। তবে ইংরেজি আর ইতিহাসে যে কম পেয়েছি সেটা বাবাকে বলেছিলাম। তাই রিভিউ করেছিলাম। সকলের আশীর্বাদ, শুভেচ্ছায় এরপরেও আমি আরও ভালো করার চেষ্টা করব।
বাবা আনসার আলি বলেন, আমরা খুব খুশি। ও স্কুলেরও সুনাম বাড়িয়েছে।
স্কুলের প্রধান শিক্ষক জুলফিকার আলি, সহ শিক্ষক আব্দুর রশিদ, গৌতম বেরা, সুজিত মণ্ডলরা বলেন, এই প্রথম স্কুল থেকে কেউ মেধা তালিকায় স্থান পেয়েছে। আমরা দারুন খুশি। স্কুল খুললেই ওকে সংবর্ধনা দেওয়া হবে।