সতেরো বছরেও মেলেনি সরকারি সাহায্য, সম্পূর্ণ প্রতিবন্ধী সন্তানকে নিয়ে বিপাকে শ্রীকান্তের সংসার

বিদ্যুৎ কান্তি বর্মন, সিঙ্গিজানি,৯নভেম্বর:- দিন আনা দিন খাওয়া দরিদ্র পরিবারে নুন আনতে পান্তা ফুরায় অবস্থা। দিনমজুর বাবা-মায়ের দুই মেয়ে ও একমাত্র পুত্র সন্তান। একমাত্র পুত্র ১৭ বছরের বিশ্বজিৎ বর্মন সম্পূর্ণরূপে প্রতিবন্ধী। দিনরাত কাটে বিছানায় শুয়েই। একশো শতাংশ প্রতিবন্ধী ১৭বছরের পুত্রের জন্য সরকারি সাহায্যের জন্য প্রশাসনের দরজায় ঘুরলেও মেলেনি কোন সরকারি সাহায্য এমনি দাবি স্থানীয় ও পরিবারের।জানা যায়, কোচবিহার জেলার মাথাভাঙ্গা বিধানসভার ঘোকসাডাঙ্গা থানার অন্তর্গত বড় শৌলমারি অঞ্চলের মুকুলডাঙ্গা গ্রামের দিনমজুর বাসিন্দা শ্রীকান্ত বর্মনের দুই মেয়ে ও এক ছেলেকে নিয়ে অভাবের সংসার।কিন্তু জন্মের পর থেকে শ্রীকান্ত বর্মনের একমাত্র পুত্র সন্তান শারিরীক প্রতিবন্ধী। চলাফেরার শক্তি তো নেই, এমনকি কথা বলতেও সে অক্ষম। তাই ১৭বছর ধরে একইভাবে কখনো বিছানায় কখনো বা মাটিতে শুয়েই সারা দিতে হয় প্রকৃতির ডাকে। ছেলের যত্ন নিতে পরিবারের একজন সদস্যকে সর্বক্ষণ সময় দিতে হয়। সংসারের অন্যান্য কাজের ফাঁকে তার মা’কে থাকতে হয় ছেলের পাশে। শ্রীকান্তের রোজগারের উপর চলে সংসার। শ্রীকান্ত বর্মন জানান, অভাবের সংসারে আমার দুই মেয়ে এক ছেলে , কিন্তু ছেলের জন্মের পর থেকেই প্রতিবন্ধী, সতেরোটি বছরে কিভাবে বিছানায় শুয়ে কাটিয়ে দিল, এখন মেয়ে বড় হচ্ছে বিয়ে দিতে হবে সেই চিন্তা একদিকে যেমন ,অপরদিকে ছেলেকে নিয়েও চিন্তা। এমতাবস্থায় নিজের খাবার সংগ্রহ করাই দুঃসাধ্য হয়ে পড়ছে। সতেরো বছর ধরে সরকারি প্রশাসন সহ স্থানীয় নেতাদের বাড়ির এ দরজা থেকে ও দরজা বারবার গেলেও কিছু লাভ হয়নি, বরং তারা এসে শুধু দেখে গেছে বলেছে সব হবে। কিন্তু কবে কি হবে কে জানে? সতেরোটি বছর কেটে গেল আজও কিছু হলো না। তিনি সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন মহলে সাহায্যের আবদার করেছেন ছেলের মুখের দিকে চেয়ে। স্থানীয় জ্যোতিষ বর্মন , রমেশ বর্মন, মনুরু মিঞারা জানান, দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে ছেলেটি কখনও মাটিতে বা কখনো বিছনায় পড়ে থাকে। ওখানে মশা, মাছি থেকে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দেওয়া সবকিছুই। আমরাও চাই দিনমজুর শ্রীকান্ত বর্মন তার ছেলের জন্য কিছু একটা সাহায্য পাক।

এ বিষয়ে বড় শৌলমারী গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান মহাদেব বিশ্বাস জানান, বিষয়টি আমার জানা নেই, বিষয়টি এলাকার গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য কোহিনুর বিবির কাছ থেকে খোঁজ নিয়ে দেখছি। অপরদিকে মাথাভাঙা দুই নং পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি দীপ্তি রায় তরফদার জানান, বিষয়টি খুবই দুঃখের, যদিও আমার জানা নেই বিডিও অফিস আবেদন করেছে কি না! তা অবশ্যই আমি খোঁজনিয়ে দেখে দ্রুত সরকারী ভাতা বেবস্থা করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *