সিভিক ভলেন্টিয়ার্সদের মাথায় আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে মারধর, বড়োসড়ো ডাকাতির হাত থেকে বাঁচল পানবাড়ি বাজার
ময়নাগুড়ি, ২০ মার্চ : অল্পের জন্য বড়সড় ডাকাতির হাত থেকে রক্ষা পেল ময়নাগুড়ির পানবাড়ি বাজার। জানা যায় শুক্রবার রাত আনুমানিক ১২ টা নগাদ ময়নাগুড়ির পানবাড়ি বাজারে পাহারা দেওয়ার জন্য চন্দ্রমোহন রায় এবং দীপক রায় নামে ময়নাগুড়ির থানার দুই সিভিক ভলেন্টিয়ার্স যান। রাত আনুমানিক ১ টা নাগদ ৬ জনের একটি দুষ্কৃতির দল ময়নাগুড়ির পানবাড়ি বাজারে দেখতে পান।এরপর সিভিক ভোলেনটিয়ার্সদের দেখতে পেয়ে দুস্কৃতির দলটির মধ্যে দুই জন দীপক রায় নামে সিভিক ভলেন্টিয়ারের উপর চড়াও হয় অন্যদিকে চন্দ্রমোহন রায়ের উপর তিনজন চড়াও হয়। দীপক রায় নামে সিভিক ভলেন্টিয়ার্সকে মারধর শুরু করে দেন দুষ্কৃতীরা। দীপক রায় দৌড়ে পালিয়ে গেলে তার পিছন পিছন দুজন দুস্কৃতি তাকে ধরার উদ্দেশ্যে দৌড়াতে থাকে বলে জানান চন্দ্র মোহন রায়। এর পর দীপক রায়কে ধরতে পেয়ে দুষ্কৃতীরা লাঠি দিয়ে মারধোর করে মাথা ফাটিয়ে দেয় বলে অভিযোগ। অপর সিভিক ভলেন্টিয়ার চন্দ্রমোহন রায়ের মাথায় আগ্নেয়াস্ত্র ঠেকিয়ে ভয় দেখাতে থাকে দুষ্কৃতীরা। এর পর চন্দ্রমোহন রায়ের মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়ে ভেঙে দেয় দুষ্কৃতীরা বলেও অভিযোগ। অন্যদিকে দীপক রায়কে একটি বাড়ির কাছে নিয়ে গিয়ে মারধর করলে বাড়ির লোকজন টের পায় এবং লোকজন জেগে ওঠায় দুষ্কৃতীরা ছেড়ে দেয় বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন। অন্যদিকে দীপক রায় কে দুষ্কৃতীদের ছেড়ে দেওয়ার পর স্থানীয়রা পুলিশকে খবর দেয়। পানবাড়ি বাজারে শুক্রবার রাতে কর্তব্যরত সিভিক ভোলেনটিয়ার্স চন্দ্র মোহন রায় বলেন, ” আনুমানিক রাত ১ টা নাগাদ বাজারে কয়েকজনকে দেখতে পাই। আমরা ভেবেছিলাম ব্যবসায়ী সমিতির লোকগুলো। এরপর একটি গলিতে যখন সামনা সামনি আসে আমাদের সাথে সাথে দুজনকে ধরে ফেলে। প্রায় ৬-৭ জন দুষ্কৃতী ছিলো প্রত্যেকের হাতে বন্দুক এবং লাঠি ছিল। সেই সময় আমার মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে ভয় দেখায়। দীপক সে সময় পালিয়ে গেল দুজন তার পিছনে ধাওয়া করে। আমার মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়ে পুরোপুরি ভেঙে দিয়ে ফেরত দেয়। এরপর কিছুক্ষন পর আমাকে ছেড়ে দিয়ে ওরা পালিয়ে যায়।” এই খবর জানতে পেরে স্থানীয়রা বাজারে ভিড় জমান এবং খবর দেওয়া হয় ময়নাগুড়ি থানায়। খবর পেয়ে ময়নাগুড়ি থেকে বিরাট পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে চলে আসে। অন্যদিকে দীপক রায় গুরুতর আহত হয় তিনি এখন জলপাইগুড়ি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন বলে জানা গেছে। তার মাথায় আটটির মত সেলাই পড়েছে বলে সূত্রে জানা গেছে। অন্যদিকে ব্যবসায়ীদের সূত্র জানা গেছে, প্রতিদিন রাত্রে সিভিক ভলেন্টিয়ার্স এবং ব্যবসায়ীরা মিলিত হয়ে পানবাড়ি বাজারে পাহারা দিত। কিন্তু কি কারণে ব্যবসায়ীরা সেদিন পাহারা দিতে বিরত ছিল তা সঠিক জানা যায়নি। পানবাড়ি বাজারের ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক আনন্দ মন্ডল বলেন, ” গত রাতে দুজন সিভিক থাকার কারনে বড় ডাকাতির হাত থেকে পানবাড়ি বাজার রক্ষা পেলো। এর আগে লকডাউনের শুরুর দিকে পানবাড়ি বাজারে বড় বড় দুটি চুরি হয়। এরপর ময়নাগুড়ি পুলিশ এবং ব্যবসায়ী সমিতির পক্ষ থেকে রাতে পাহারা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। কিন্তূ গত রাতে আমাদের ব্যবসায়ী সমিতির কেউ ছিল না । তারা কেন ছিল না তা আমার জানা নেই। তবে এই নিয়ে বৈঠক আছে। বৈঠক করে বিষয়টি পরিষ্কার হবে।” শনিবার ঘটনাস্থলে আসেন জলপাইগুড়ির ডিএসপি(ক্রাইম) বিক্রমজিত লামা, ময়নাগুড়ি থানার আইসি ভূষণ ছেত্রী। তারা ঘটনস্থলে পরিদর্শন করেন। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে বাজারে থাকা সিসিটিভি ফুটেজ পাওয়া গিয়েছে। তার ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করেছে ময়নাগুড়ি থানার পুলিশ।এই বিষয়ে ময়নাগুড়ি থানার আইসি ভূষণ ছেত্রী বলেন,” ছয় জন দুষ্কৃতী ছিল। সিসিটিভি ফুটেজের ভিত্তিতে ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।আগ্নেয়াস্ত্র ছিল কি না তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।”