হেডমাস্টার হরিমোহন বর্মন

ক্ষীরোদা রায় : সেলা ময়নাগুড়ি থাকি মাদারিহাট আসিবার বাদে মাত্র একখান রেলগাড়ি চলিসে, ১৯৪৮ সালে বিএ থার্ড ইয়ারত পড়ির সময় স্টাইপেন্ড পাবার বাদে দুইজন নামী মানষির সই নাগে, সই নিবার বাদে হরিমোহন বর্মন সেলা মাদারিহাট আইসেন। উমুরা ঠিক করিসে যে মাদারিহাট’ত যজ্ঞেশ্বর রায়ের সই নিবেন। সেই মতন উমুরা মাদারিহাট আসি হাজির হইসেন যজ্ঞেশ্বর রায়ের বাড়িত। সেই যে উমুরা মাদারিহাট আসিলেন তারপর ধীরে ধীরে বিয়াও, শিক্ষকতার জীবন আরহ নিজস্ব বাড়িঘর বানে বসবাস করা শুরু মাদারিহাট’ত।হরিমোহন বর্মন মাদারিহাটের রাঙ্গালিবাজনা মোহন সিং হাই স্কুলের হেডমাস্টার ছিলেন। উমার জন্ম হয় তৎকালীন জলপাইগুড়ি জেলার দেবীগঞ্জ থানার পামুনি ইউনিয়নের ফাটলহারি গ্রাম’ত। স্বাধীনতার পর অবশ্য দেবীগঞ্জ পূর্ব পাকিস্তানের অধীনত ছিল। সেই সময় স্বাধীন ভারত’ত ভারতের সংবিধান সভার সদস্য ছিলেন উপেন্দ্র নাথ বর্মন। ১৯৫১ সালে হরিমোহন বাবু স্কুলের মাস্টার হিসাবে যোগ দেন। ১৯৫২ সালে কলকাতা ডেভিড হেয়ার কলেজ’ত বিটি পড়ার বাদে ভর্তি হন। তারপর ১৯৫৪ সালে রাঙ্গালিবাজনা মোহন সিং হাই স্কুলের নয়া হেডমাস্টার হিসাবে যোগ দেন। উল্লেখ্য, ১৯৪৬ থাকি ১৯৬২ সাল অবদি এমএলএ পদে ছিলেন যজ্ঞেশ্বর রায়, উমুরা স্কুল বানেবার বাদে নিজের ১২০ বিঘা জমি আর উমার কাকা আর কাকি মিলি দেয় আরো ৪৫ বিঘা জমি। যজ্ঞেশ্বর রায় চাইসিলেন এটেকার মানষিলা লেখা পড়া শিখুক। স্কুলের মাস্টারি করিবার সাথতে হরিমোহন বর্মন জড়িত হয় উত্তরাখণ্ড, উতজাস, নস্যশেখ আন্দোলন’ত। ইয়ার নগতে ‘উত্তর বঙ্গ’ নামে একখান পত্রিকা প্রকাশ করিসেন ১৯৫৮ সালে। জাতীয়তাবাদী ভাবনা থাকি প্রকাশিত এই পত্রিকা খান নিয়া বর্তমানে গবেষকের ঘর গবেষণা করির ধরিসেন। লেখিসেন বই, উমার লেখার বিশেষ বই গুলা হইল ‘বেরানীর কাথা’, ‘যম রাজার বিপদ’, ঠাকুরমার বটুয়া ( ঠাকুরমার ঝুলির নাখান), ‘রাজবংশী শ্লোক’, ২৭ শে মাঘের কাহিনি, ‘মহা মানবের কাথা’ ….। স্কুলের ছাত্রছাত্রীলা যাতে পড়াশুনা শিখি আরও বড়ো হবার পারে সেই চেষ্টা করিসেন উমুরা। খিব ভালোবাসিসেন ছাত্রছাত্রীলাক। উমার মৃত্যুত বড় ক্ষতি হৈল উত্তরবঙ্গের ভূমিপুত্র সমাজের। নব্বই পার করি চুরানব্বই বছর বয়সে মঙ্গলবার সকাল আনুমানিক এগারোটার পর উমার মৃত্যু হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *