সমস্ত জাতিগোষ্ঠীর মানুষকে এক সুতোয় বাঁধতে চান কালচিনির নির্দল প্রার্থী বিনয় নার্জিনারী
ক্ষীরোদা রায়, কালচিনি, ২২ মার্চ: নির্দল প্রার্থী হিসেবে কালচিনিতে মনোনয়ন জমা দিলেন বিনয় নার্জিনারী। পেশায় কৃষক বিনয় সমাজকর্মী হিসেবে পরিচিত। এবার নির্দল প্রার্থী হিসেবে কালচিনির ভোটের ময়দানে লড়াই করছেন তিনি। এইদিন আলিপুরদুয়ারে ডুয়ার্স কন্যায় মনোনয়ন জমা দিলেন তিনি। কালচিনিতে পাহাড়, সমতল, সবুজ বন ও চা বাগানের মাঝে হরেক ভাষাভাষীর মানুষের সহবাস।প্রতিটি জনগোষ্ঠীর আর্থ-সামাজিক বিষয়ে পৃথক দাবি রয়েছে। তপশিলি উপজাতিদের জন্য সংরক্ষিত এই আসনে বিনয় নার্জিনারী নির্দল প্রার্থী হিসেবে সমস্ত জাতি জনজাতির মানুষের দাবিসমূহ নিয়ে পৃথক অ্যাজেন্ডা তৈরি করে ভোটে লড়ছেন।
বিনয়ের কথায়, “প্রতিটি জনজাতির স্বাতন্ত্র্য বজায় রেখে তাদের উন্নয়ন করানোই আমার লক্ষ্য।” সধারন ভোটারদের কাছে পৌঁছতে বিনয় সামাজিক মাধ্যমকে ব্যবহার করছেন। তাঁর কথায়, “আমি নিজেও যুব সমাজের প্রতিনিধি, যুবকদের গরিষ্ঠ অংশই চব্বিশ ঘন্টা সামাজিক মাধ্যমে যুক্ত থাকে, তাদের কাছে আমার ভাবনাকে পৌঁছে দিতে সামাজিক মাধ্যমকে ব্যবহার করছি।” উল্লেখ্য, গতবছর থেকে দেশজুড়ে চলা লকডাউনের সময়ে বিনয় নার্জিনারী বিভিন্ন পরিষেবা দিয়েছেন। সরকারি অফিস, বাজার ঘাট, কোয়ারেন্টিন সেন্টারে স্যানিটাইজার স্প্রে করছিলেন। এমনকি কালচিনি কৃষক বাজার কোয়ারেন্টিন সেন্টারে খাবার সরবরাহ করেছিলেন। রাজ্যের একাধিক কোয়ারেন্টিন সেন্টারে যেখানে খাবারের মান নিয়ে অভিযোগ ওঠে বিনয় নার্জিনারী কোয়ারেন্টিন সেন্টারে আবাসিকদের সরবরাহ করেছেন উন্নত মানের খাবার। বিরিয়ানি, ফ্রায়েড রাইস, মাংস বা মাছ ভাত ছিল খাদ্য তালিকায়। সরকারি আধিকারিকরাও সেই খাবার খেয়ে তৃপ্তি পেয়েছেন বলে বিনয় জানালেন। তিনি বলেন, “করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবার পর কোয়ারেন্টিন সেন্টারের সংখ্যা কমানো হয়, তবে ঐ সময় আমার কোয়ারেন্টিন সেন্টারটি সহ জেলায় আরও একটি সেন্টার শেষ অবধি চালু ছিল।” ফেসবুকেও এই বিষয়গুলি প্রচার করছেন বিনয়।কালচিনিতে হিন্দু, মূসলিম, শিখ, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী মানুষের বসবাস রয়েছে। জাতিগত দিক থেকে দেখলে রাজবংশী, নমশূদ্র, মেচ, রাভা, গারো, নেপালি, মুন্ডা, ওড়াওঁ, বরাইক, চিক বরাইক, পাহাড়ি, মালবাহাড়ি বা নাগা সহ বহু জনজাতির বাস। তাদের পৃথক সাংস্কৃতিক পরিচয় রয়েছে। যা ডুয়ার্সের রাজনীতির অন্যতম নির্ধারক বলে বিশ্লেষকরা মনে করেন। উল্লেখ্য, তৃণমূল কংগ্রেস ও বিজেপির কর্মীদের মধ্যে প্রার্থী নিয়ে আভ্যন্তরীণ ক্ষোভ বিক্ষোভ ছিল, যদিও তা অনেকটাই প্রশমিত হয়েছে। তবে এইদিন আলিপুরদুয়ারে নমিনেশন জমা দেওয়ার পর বিনয় বলেন, ডুয়ার্সের রাজনীতিকে বুঝতে পারলে ভারতীয় রাজনীতিকে অনেকটা বোঝা যায়। জিতলে কালচিনির উন্নয়নের মধ্য দিয়ে সমস্ত জাতিগোষ্ঠীর মানুষকে এক সুতোয় বেঁধে রাখব।