জীবন যুদ্ধে হেরে যেতে যেতেও হাঁটুতে ভর দিয়ে লড়াই করে,বাঁচার চেষ্টা প্রতিবন্ধী সুভাষ বর্মনের
সঞ্জয় কুমার বর্মন,মাথাভাঙ্গা:-
দুটো পা পোলিও রোগে অকেজো,হাটতে পারে না,তাই হাঁটুতে ভর দিয়ে চলা ফেরা করতে হয়। এ যেন জীবন যুদ্ধে হেরে যেতে যেতেও লড়াই করে বাঁচার চেষ্টা। এভাবেই প্রতিনিয়ত জীবন যুদ্ধে বেঁচে থাকার চেষ্টা করে যাচ্ছে মাথাভাঙ্গা ভবের হাটের প্রতিবন্ধী সুভাষ বর্মন।
জানা যায় প্রতিদিন সকালে হাঁটুতে ভর দিয়ে মাথাভাঙ্গা শহরের বিভিন্ন এলাকায় কিলোমিটার পর কিলোমিটার পথ এক মুঠি ভিক্ষের আসায় ছুটে ছিলেছে প্রতিবন্ধী সুভাষ। বাড়িতে অসুস্থ মা ও ছোট মেয়ে নিয়ে তার ছোট সংসার। অর্থ উপার্জন করতে তিনি এক মাত্র পুরুষ। তাই অভাবে সংসারে হাল ধরতে হাঁটুকে ভর করে জীবন যুদ্ধে বেঁচে থাকার চেষ্টা করে চলছে প্রতিবন্ধী সুভাষ।
পায়ে হাটতে না পারায়। হাঁটু তে ভর করে চলাফেরা করে ভিক্ষা বৃত্তি অবলম্বন করে কোন রকমে বাড়িতে বিছানায় শয্যাশায়ী মা ও ছোট মেয়েকে নিয়ে আধ পেটা খেয়ে বেঁচে থাকার তাগিদে লড়ে চলছে। ভেবেছিলেন বিয়ে করে মা, স্ত্রীকে নিয়ে কুঁড়ে ঘরে বৈকুণ্ঠ সুখ লাভ করবেন। সমস্ত প্রতিকূলতা মাজে সুভাষ একা উপার্জনে সংসার চলছিল। কিন্তু হঠাৎ পঙ্গু স্বামীকে ফেলে রেখে স্ত্রী চলে গেল। তবে স্ত্রী রেখেগেলেন ভালোবাসার ফলস্বরূপ দুই কন্যা সন্তানকে। স্ত্রী চলে যাবার পর মেয়েদের কথা ভেবে জীবন সংগ্রামটা চালিয়ে যাবার জেদ চেপে যায় সুভাষের। বহু কষ্ট করে এক মেয়ের বিয়ে দিয়েছে। আরেক মেয়ে পড়াশুনা করে ক্লাস নাইনে কিন্তু পড়াশুনার খরচ যোগান না দিতে পাড়ার জন্য সেটাও ঠিকঠাক পড়তে পারছে না। বর্তমানে তার মা খুব অসুস্থ বিছানায় শয্যাশায়ী। লকডাউনে দোকানদার ও পথ চলতি মানুষের ইনকামে অনেকটাই ভাঁটা পড়েছে তাই ভিক্ষা পাওয়া টাও সমস্যার মুখে পড়েছে। এই অবস্থায় মা ও মেয়েকে নিয়ে আর সংসার চালাতে পারছেন না। মাথা গোজার জন্য যে ঘর আছে তার অবস্থা খুবই খারাপ। বর্ষা শুরু হচ্ছে বেশি বৃষ্টি হলেই থাকার জায়গা টুকু নিয়েও সমস্যায় পড়তে হবে। সরকারের তরফ থেকে সেরকম ভাবে কোন সাহায্যই তার পাওয়া হয় নি বলে অভিযোগ। এমনকি স্বাস্থ্যসাথী কার্ডটিও হয় নি। মা,মেয়ে ও তার পেটের তাগিদে শীত গ্রীষ্ম বর্ষায় তাকে বের হতে হয় রাস্তায় ভিক্ষা করতে।
এই জগতে হায় সেই বেশি চায় আছে যার ভুঁড়ি ভুঁড়ি। আর সুভাষ বর্মনের মত ব্যক্তিদের চাওয়া পাওয়া মিশে যায় স্বপ্নের মণিকোঠায়।
সুভাষ বর্মন জানান সরকারের তরফ থেকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিলে তার জীবন চলার পথ কিছুটা হলেও সুখ মুখর হবে বলে মনে করেন।
বিষয় মাথাভাঙ্গা ১নং ব্লকের বিডিও সম্বল ঝাঁ জানান ইতিমধ্যে আমরা নতুন ভাবে এবছর ৯০০জনকে এপ্রুভ করেছি তারা সমস্ত রকম সরকারি সাহায্য পাচ্ছে।তবে মাথাভাঙ্গা ১ নং ব্লক এরকম কেউ বাদ পড়তে পারে, তা হতে পারেনা। যদি কোনো কারণে তিনি পেয়ে না থাকেন। তবে আগের জমা দেওয়া আবেদনপত্র বা তথ্য নিয়ে এসে সরাসরি যোগাযোগ করতে পারেন,বা দুয়ারে সরকার ক্যাম্পের মাধ্যমে নুতুন ভাবে আবেদন করতে পারেন।
আবেদন থাকলে অবশ্যই সমস্যা সমাধান হবে।