তৃনমূল কংগ্রেসের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে জেরবার নয়ারহাট
সঞ্জয় কুমার বর্মন, মাথাভাঙ্গা: রবিবার সন্ধ্যায় তৃনমূল কংগ্রেসের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে সাপ্তাহিক হাট জনশূন্য হয়ে পড়ে। এলাকা পুরোপুরি থমথমে অবস্থা। ভবানীপুর বিধানসভা কেন্দ্রে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জয় লাভ করে। সেই খবর পাওয়া মাত্রই আবির মেখে তৃনমূল কংগ্রেস নেতা কর্মীরা মিছিল বের করে। মিছিল শেষে দলীয় কার্যালয়ের সামনে সংক্ষিপ্ত ভাষণ চলাকালীন তৃনমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব চরমে উঠে বলে অভিযোগ। দু’পক্ষের ৬ জন আহত হন বলে দাবি করেন দুই গোষ্ঠী। ঘটনাটি মাথাভাঙ্গা ১ নং ব্লকের নয়ারহাট বাজারে। ঘটনাকে কেন্দ্র করে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয় নয়ারহাট বাজারে। সঙ্গে সঙ্গে দোকানপাট বন্ধ করে দেয় ব্যবসায়ীরা। হুড়োহুড়ি করে পালাতে থাকে হাটুরেরা। জনশূন্য হয়ে পড়ে নয়ারহাট বাজার। যুব তৃনমূল নেতা হিমাদ্রী রায় বর্মা জানান, শনিবার গরিবপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে তৃনমূল কংগ্রেসের কর্মী সভায় উস্কানিমূলক বক্তব্য রাখেন NBSTC এর চেয়ারম্যান পার্থ প্রতিম রায়। তার পরিপ্রেক্ষিতে রবিবার সন্ধ্যায় নবাগত যুব তৃনমূল নেতা সুমন্ত অধিকারীর নেতৃত্বে ৪ জন তৃনমূল কর্মী বিট্টু বর্মন, গৌতম বর্মন, সুজন বর্মন,পবেন বর্মনকে মারধর করে বলে অভিযোগ করেন তিনি। তিনি এও বলেন, যুব নেতা বঙ্কিম বর্মন এবং তৃনমূল নেতা বিধান দত্তকে ধাক্কাধাক্কি করে এবং এক তৃনমূল কর্মীর দোকান ভাঙচুর করে বলে জানান তিনি। এনিয়ে মাথাভাঙ্গা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করবেন এবং জেলা সভাপতিকে বিষয়টি বলবেন বলে জানান। অন্যদিকে যুব তৃনমূল কংগ্রেসের কনভেনর সুমন্ত অধিকারী জানান, অভিযোগ পুরোপুরি ভিত্তিহীন। উল্টে যুব তৃনমূল নেতা বিকাশ বর্মন এবং সুজন বর্মনকে আটকে রেখে মারধর করে হিমাদ্রী রায় বর্মার দুষ্কৃতীরা। কিন্তু আমার কয়েকজন ছেলেকে বেআইনিভাবে পুলিশ আটক করে বলে তিনি দাবি করেন। বিষয়টি ব্লক এবং জেলা নেতৃত্বকে জানানো হয়েছে বলে তিনি জানান। তিনি এও বলেন, আসামিরা খোলা ময়দানে ঘুরে বেড়ালেও পুলিশ তাদের ধরছে না। সেনিয়ে প্রশ্ন তুলে দিচ্ছেন তিনি। মারধরের খবর পেয়ে ছুটে আসে মাথাভাঙ্গা থানার পুলিশ। সংশ্লিষ্ট থানার আই সি বিনোদ গজমের নেতৃত্বে বিশাল পুলিশ বাহিনী এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। ঘটনাকে কেন্দ্র করে বেশ কয়েক জনকে আটক করেছে পুলিশ। এমনটাই খবর পুলিশ সূত্রে। পার্থ প্রতিম রায়ের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ নিয়ে তাকে টেলিফোন করলে তিনি জানান, বিস্তারিত না জেনে কোন মন্তব্য করব না। সংশ্লিষ্ট ব্লকের দলীয় সভাপতি মহেন্দ্র বর্মন জানান, গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব বরদাস্ত করা হবে না। দলীয় ভাবে তদন্ত করা হবে। বিষয়টি নিয়ে পুলিশকে বলা হয়েছে।তিনি এও বলেন, বিধানসভা ভোটের পর থেকে নয়ারহাট বাজার শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রেখে চলছে। কিন্তু এদিন কোন কিছু ঘটে থাকলে সেটা কখনোই বরদাস্ত করা হবে না। অন্যদিকে তৃনমূলের জেলা সভাপতি গিরীন্দ্র নাথ বর্মন জানান, তৃনমূলের কোন গোষ্ঠী নেই। গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কোন স্থানও নেই। বিষয়টি দলীয়ভাবে তদন্ত করে কঠোরভাবে তার দমন করা হবে বলে তিনি জানান। উল্লেখ্য কয়েকদিন ধরেই তৃনমূল কর্মীকে মারধর, যুব তৃনমূল নেতা এবং তার স্ত্রীকে মারধর সহ একে অপরের বিরুদ্ধে মাথাভাঙ্গা থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন দুই পক্ষে। তাই চরমে উঠেছে নয়ারহাট বাজারে তৃনমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব।