দুই নাবালিকা ছাত্রী ধর্ষণে গ্রেপ্তার অভিযুক্ত শিক্ষক

নিজস্ব সংবাদদাতা, ফালাকাটাঃ
অভিযোগ পাবার চব্বিশ ঘন্টার মধ্যেই দুই নাবালিকা ছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত রুস্তম আলী গ্রেপ্তার। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গতকাল রাতেই প্রমোদনগর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় অভিযুক্তকে। এদিন বিকেলে অভিযুক্তের কঠোর শাস্তির দাবিতে এলাকার যুবকেরা মোটর বাইক নিয়ে প্রতিবাদ রেলি বের করে। তবে ঘটনার কথা প্রকাশ্যে আসার পর ফালাকাটা ব্লকের রাজনৈতিক দলগুলির কোন প্রতিনিধি দরিদ্র রাজবংশী পরিবার দুটির বাড়িতে সহানুভূতি জানাতে আসেনি।

বাবার চেয়েও বয়সে বড় প্রাইভেট শিক্ষক রুস্তম আলীকে জেঠু বলে ডাকতেন ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণীর দুই স্কুল ছাত্রী। নার্সারি স্কুলের ভেতর দীর্ঘদিন ধরে তাদের ধর্ষণ করতেন ওই প্রাইভেট শিক্ষক। বুধবার ঘটনার কথা প্রকাশ্যে আনতেই এলাকার ক্ষিপ্ত বাসিন্দারা বুধবার রাতেই ভাঙচুর চালায় ওই শিক্ষকের কোচিং সেন্টার তথা নার্সারি স্কুলে। ভাঙচুরের ঘটনার খবর পাবার পর জটেশ্বর ফাঁড়ি ও ফালাকাটা থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছায়। স্থানীয় মানুষ ও পুলিশকর্মীরা স্কুল ঘরের ভেতর পড়ে থাকা জিনিসপত্র দেখে শুধু অবাক হয়েছেন নয়, স্কুল ঘরের এমন গর্হিত কাজ যে ঘটতে পারে তাদের অনেকেই ভাবতে পারেননি। রুস্তম আলী যে নার্সারি স্কুল খুলেছেন তার বৈধ কাগজপত্র নেই বলে অভিযোগ। লকডাউনের কারণে দুই বছর ধরে স্কুল বন্ধ থাকায় অভিভাবকেরা ওই প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে তাদের সন্তানকে পড়াশোনার জন্য পাঠিয়েছেন, দুই পড়ুয়াকে শেষ পর্যন্ত যে শিক্ষকেরই লালসার শিকার হতে হবে ভাবতে পারছেন না এলাকাবাসী। এমনকি অভিযুক্তের পরিবারের সদস্যরা চাইছেন এমন কুকর্মের জন্য রুস্তম আলীর কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করা হোক।
ঘটনার কথা বলতে গিয়ে, দিনমজুর পরিবারের ষষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্রীর বাবা চোখের জল মুছতে মুছতে বললেন, ওর মা মারা গিয়েছে। পরে আমি আবার বিয়ে করি। খুব কষ্ট করে ওকে বড় করেছি। মাতৃহীন মেয়েটির যে এতবড় সর্বনাশ হবে ভাবতেই পারছি না। সপ্তম শ্রেণীর অন্য ছাত্রীটির বাবা ভিণরাজ্যে কাজ করেন। সেই তার মাকে শিক্ষকের কুকর্মের কথা প্রথম জানায়।

ফালাকাটা থানা সূত্রে জানা গেছে, বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যাওয়া অভিযুক্ত রুস্তম আলীকে প্রমোদনগর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। জটেশ্বর লীলাবতী মহাবিদ্যালয়ের স্টেট এইডেড কলেজ টিচার তথা সমাজকর্মী হরেকৃষ্ণ বর্মন ঘটনার নিন্দা জানিয়ে প্রশাসনের কাছে ঘটনায় যুক্ত অপরাধীর কঠোর শাস্তির দাবি জানান। তিনি বলেন, একজন শিক্ষক ও সমাজকর্মী হিসেবে আবেদন করছি সমাজের সকল শিক্ষিত মানুষকে এই ধরনের ঘটনার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে এগিয়ে আসতে হবে।

জটেশ্বরের ঠাকুর পঞ্চানন স্মারক সমিতির সম্পাদক কার্তিক চন্দ্র রায় বলেন, যে বা যারা এই ধরনের ঘটনার সঙ্গে যুক্ত প্রশাসনের কাছে অনুরোধ যাতে অপরাধী কঠোর শাস্তি পায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *