অনন্ত মহারাজ আর বংশীবদনের উপর ক্ষোভ সোশ্যাল মিডিয়াত, বাস্তবের রাজনীতিত সঠিক পথে দুই নেতা

ক্ষীরোদা রায়ঃ শিলিগুড়িত বিজয়া সম্মিলনীত অনন্ত মহারাজ আর বংশীবদন বর্মনের হাজির থাকা নিয়া সোশ্যাল মিডিয়াত বহু পোস্ট জমা হইসে। অনেকে ক্ষোভ প্রকাশ করিসে। বাস্তবের রাজনীতিত সঠিক ঘাটাত দুই নেতা।

সোশ্যাল মিডিয়া জননেতা তৈরি করেনা, জননেতা তৈয়ার হয় বাস্তবের মাটিত। ভূঁঈবাড়ি চাষ করিতে কিষ্যান অক নেঙোল জোয়াল নিয়া দহলা বাড়ি যাবার নাগে, সোশ্যাল মিডিয়াত কিন্তু ভূঁঈ চাষ হবে না। হয়তো নিজে কতটা জাতি দরদী সেইটা প্রকাশ করির পারে, কিন্তু বাস্তব রাজনীতিত জাতির প্রতি দরদ ভোটের ড্যাস্কত জমা হয় না। সোশ্যাল মিডিয়ার জাতি দরদীয়া ভাব বাস্তবের সঙ্গে মিল নাও থাকির পারে। যেমন, কুনো মানষি রাজবংশী কামতাপুরী আবেগ বা ভাষা কৃষ্টি নিয়া ফেসবুক পোস্ট করিলেও বা অনন্ত মহারাজ – বংশীবদনের নিন্দা অথবা প্রশংসা করি পোস্ট করিলেও বাস্তবে ভোট রাজনীতিত তায় কোন না কোন রেজিস্টার্ড জাতীয় বা বড় আঞ্চলিক দলের সমর্থক বা কর্মী অথবা তার সাগাই সোদর যুক্ত।

ভোট রাজনীতির অঙ্কের হিসাব যদি করা যায় বিতি যাওয়া বছর গিলার লোকসভা আর বিধানসভা নির্বাচনের ফল দেখিলে বুঝিবেন রাজবংশী বা কামতাপুরী জাতীয়তাবাদী ভাবাবেগ অতটা শক্তিশালী না হয়। মরনের আগ মুহূর্ত অবদি অতুল রায় কুনোদিন কুনো নির্বাচনত ২০ হাজার ভোট পায় নাই, নিখিল রায়ের ক্ষেত্রেও একে কথা। বিতা একুশের বিধানসভা ভোটত কামতাপুরী মহাজোটের কুনো প্রার্থী ৫ হাজার ভোট পায় নাই। বংশীবদন আর অনন্ত মহারাজ তো ভোট রাজনীতির সাথত সরাসরি যুক্ত নাই, যদিও ইমিরা ঢোকা দেয়। অবশ্য শক্তি আর প্রভাব আছে বুলি যে কুনো বড় দল ইমাক ঢোকা হিসাবে পাবার চায়। তবে সরাসরি ভোট’ত প্রার্থী দিলে ইমিরাও সেই একে পরিমাণ ভোট পাবে। ইয়ার মূল কারণ – ১. রাজবংশী বা কামতাপুরী জনসংখ্যার মাত্র ১০ থাকি ১৬ শতাংশ এই দলগুলার সাথে যুক্ত যার মধ্যে মাধ্যমিক অনুত্তীর্ণ মানষি বেশি। ২. এই সমাজের শিক্ষিত বুদ্ধিজীবি ইতিহাস, ভাষা, সংস্কৃতি নিয়া প্রচুর জ্ঞান আর তথ্যের অধিকারী হৈলেও সরাসরি এই দলগুলার সঙ্গে যেমন জড়িত না হয় আবার নব্বই শতাংশ রাজবংশী কামতাপুরী বুদ্ধিজীবি বড় বড় রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত। ৩. অনেকে সমালোচনা করেন রাজবংশী বা কামতাপুরী দলগুলার গঠণ আর দলের কাঠামোর ভিতর গণতন্ত্র নাই, দলগুলার শীর্ষ নেতানেত্রীলার কথাতে দল চলে। বাস্তবে রাজনৈতিক প্রক্রিয়া সম্পর্কে শিক্ষিত সচেতন নাগরিক সমাজের অংশগ্রহণ না থাকাতে দলের নেতানেত্রীলাক নিজেদের বিচার বুদ্ধি প্রয়োগ করি দল পরিচালনা করির নাগে। ৪. সবচেয়ে বড় কথা জাতীয় আর আঞ্চলিক রাজনীতিত এই মুহূর্তে যে একদলীয় আধিপত্য চলেছে তাতে ছোট ছোট রাজনৈতিক গোষ্ঠীর উপর আক্রমণ নামি আসির সম্ভাবনা আছে। বিশেষ করি রাজবংশী জনসমাজ এমনিতে নানা রাজনৈতিক আদর্শে ভাগ হয়া আছে। স্ববিরোধীতার রাজনীতি নিজেদের ভিতর যেমন আছে তেমনি লড়াইটা চালের নাগেছে বায়রা আর ভিতরতো। যেমনটা কামতাপুর আন্দোলনের সময় দেখা গেইসে। রাইজ্যের ভিতর একদলীয় আধিপত্য কেমন করি কামতাপুরী জাতীয়তাবাদের উপর আঘাত হানে এই রাজনৈতিক শিক্ষা বর্তমানের নেতালাক বাধ্য হয়া বড় বড় রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আপষ করাতে বাধ্য করে। যদি সমাজের আশি শতাংশ মানষি সরাসরি জাতীয়তাবাদী ভাবাবেগ নিয়া রাজনৈতিক আন্দোলনত যুক্ত হৈল হয় হয়তো এতদিনে কামতাপুরী, জিসিপিএ উদ্দেশ্য পূরণে সফল হৈল্ হয়।
গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাত ক্ষমতা হৈল রাজনীতির মূল বিষয়। সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা হৈল্ আসল ক্ষমতা। বড় বড় রাজনৈতিক দলের উত্তরবঙ্গের নেতার ঘর সরকারি অথবা দলের সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ার সাথে যুক্ত নাই। কলকাতা থাকি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, উত্তরবঙ্গের নেতানেত্রীর ঘর সেই সিদ্ধান্ত বাস্তবে প্রয়োগ করে। কিন্তু যদি, রাজবংশী কামতাপুরী দলগুলাক শক্তিশালী করা যায়, গণসংগঠণের ভিত মজবুত করা যায় তাহলে সরকারি সিদ্ধান্ত গ্রহণের উপর প্রভাব ফেলার ঘাটাটা আরো শক্ত হবে। যেমনটা বড় বড় ইন্ডাস্ট্রিয়ালিস্টের ঘর নিজেদের পাখে সুবিধা আদায়ের তানে সরকারের উপর চাপ তৈরি করে। রাজবংশী বা কামতাপুরী জনসমাজের পক্ষে এই কাজটা করাও সম্ভব। তবে, বাস্তব কছে এলাও রাজবংশী কামতাপুরী সমাজের পক্ষে এই ধরনের প্রক্রিয়ার নগত যুক্ত হওয়া অসম্ভব। এর কারণ রাজবংশী কামতাপুরী সমাজের ভিতরত থাকা অনেক বিষয়ে দ্বন্দ্ব নাগি আছে। এই দ্বন্দ্বের মীমাংসা দরকার। দরকার আলোচনার টেবিলত বসার। কিন্তু এই দ্বন্দ্ব চলিবে, চলিতে থাকিবে, তার কারণ এই দ্বন্দ্বের পাছিলাত আছে মনস্তাত্ত্বিক মতাদর্শগত আবেগ। যে আবেগের পিছনত কূনো সময় মার্কসবাদ লেনিনবাদ আর কুনো সময় উদারবাদের বড় ছায়া নাগি আছে।

বংশীবদন বা অনন্ত বাস্তবের মাটিত রাজনীতি করে, বাস্তবের মাটির এই রাজনীতিত উমার সঙ্গী দরিদ্র, নিরক্ষর রাজবংশী মানষি। শাসকের রক্তচক্ষু সম্পর্কে উমুরা সজাগ সচেতন। যেমনটা অতুল বা নিখিলের উপর ঘটিসে, যে কারণে দলের কোমড় ভাঙিসে। অনন্ত বা বংশী ঠিক এই জাগাত সচেতন। বড় দলের উপর চাপ তৈরি করা, বিশেষ বার্তা দেওয়া, দর কষাকষি, আলোচনা সৌগ ঘাটা প্রস্তুত থুইয়া কূটনৈতিক অস্ত্র প্রয়োগের রাজনীতি ছাড়া গণ আন্দোলন তৈরি করি আগাইলে যেকোন মুহূর্তে বড় বিপদ আসিবে। গণ আন্দোলন সেলায় সফল হয় যেলা সমাজের সৌগ অংশের মানষির একশো শতাংশ অংশগ্রহণ থাকে। সেই হিসাবে অনন্ত বা বংশীবদন রাস্তা ভূল করে নাই। তবে মূল দাবি থাকি সড়ি গেইলে দুই নেতায় অস্তিত্বহীন হয়া যাবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *