কাঞ্জির জল কি ? রাজবংশী সমাজে কাঞ্জির জলের গুরত্ব !

ক্ষিরোদা রায় : চৈতের সারান্তিত তৈয়ার করা হয় কাঞ্জির জল। দ্যাওয়া ফুটি দেহার উপর চড়ক পড়ুক বা চড়কের আলোর ঝাল নাগুক, এমনকি কুকুর, বিলাই কামড়াইলেও কাঞ্জির জল হৈল অব্যর্থ ঔষধ, রাজবংশী সমাজের মানষি দিঘল দিন ধরি এমনটা মনে করি আইসেছে। তবে ঘরে ঘরে এই জল বানে থোওয়া হয় না। এই জল বানাইতে কঠোর বারনকোরন মানির নাগে বুলি বর্তমান রাজবংশী সমাজের বেটিছাওয়ালা এই জল বানায় না।চৈত সারান্তিত বিষুমা তিথিত দেওয়ার হয় ভাজাভুজা। ভাজাভুজা ঠাকুরক দিবার আগত কাঞ্জির জল পাতির ব্যবস্থা করা হয় বুলি জানা গেইসে। এই জল বানের বাদে দেহা, মন বিশুদ্ধ থাকির নাগিবে। অশৌচ অবস্থায় এই জল বানা যায় না। গাও ধুইয়া ভাজাভুজার বাদে চুড়া, গম, পয়রা, জোয়ার, ছোলা, মটর ভাজা হয়, ইয়ার নগত কাঁচা মরুচ, পিঁয়াজি, এসুন, আদ্রক, পাটার শুকাতি, ভিস্তি, পানি মথারি মিশানো হয়। তবে এইলা তাগিলায় মিচ্চাও খানিক করি নিয়া কাঞ্জির জলের বাদে থোওয়া হয়। ভাজাভাজির কাজ শেষ হয়া, আন্দন ঘরের একপাখে কোনাত নিরাপদ জাগাত কাঞ্জির জল পাতি থুবার বাদে ব্যবস্থা করা হয়। এই জন্য নাগিবে বাঁশের ঝোকা বানের। খাল খুড়ি ঝোকা বসের নাগিবে। ঝোকা অনেকটা ধোরকার মতন হৈলেও, ধোরকার মতন গাঁথুনি থাকেনা। ঝোকার উপর বসে থোওয়া হয় পিতল বা কাঁসার বা দস্তার নোটা, কাইচের বয়ামও বসে থয় অনেকে। তারপর সেটে পরিস্কার জল, ভাজাভুজা দেওয়া হয়। ইয়ার পর ওইটেটা দেওয়া হয় আধা সিজা বা সিজি ফুটা ভাত সহ ভাতের মার। পরিস্কার হান্ডিত ভাত আন্দির নাগিবে। ভাত আন্দির পর আরো গাও ধুবার নাগে। গোটায় কাজ শ্যাষ না হওয়া অবদি ঘরের বাইরত অইন্য কোন কাজ করা যায় না বুলি জানা গেইসে। এমনকি আন্দন ঘরোত যে জাগাত ঝোকা বসানো হয় সেইটে যাতে কুনো আমিষ খাবারের আইটা ছুয়া না নাগে। প্রতি সপ্তাহে ওই জলের পুলি আলাদা করি থুবার পর বয়াম বা নোটার বাকি জল ওঠে থোওয়া হয়। ওঠে থোওয়া জল দেওয়া হয় যাক কুকুর, বিলাই কামড়ায় তাক খয়ের বাদে। দেহার উপর বাজ বা চড়ক পড়িলে সেই জল ছিটি দেওয়া হয়। আর অইন্য পাখে বয়াম বা নোটা প্রতি সপ্তাহে ভাল্ করি মাঞ্জি ঘষি ধুবার পর পরিস্কার জল দেওয়া হয় আর সেই জলত কাঞ্জির জলের পুলি ফেলে দেওয়া হয়। কাঞ্জির জলের পুলি অইন্য কাহো নিগি নিজের বাড়িত কাঞ্জির জল বানেবার পারে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *