এলং বোরোলি উৎসব: নদী ও নদীয়ালি মাছের সুরক্ষায় এক অনন্য উদ্যোগ
আলিপুরদুয়ার: আলিপুরদুয়ার জেলার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, অরণ্য ও নদীপ্রবাহ বরাবরই পর্যটকদের আকর্ষণ করেছে। সেই প্রাকৃতিক ঐতিহ্যকে আরও এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যেতে চলেছে এক অভিনব আয়োজন— “এলং বোরোলি উৎসব”। আগামী ২২, ২৩ ও ২৪ আগস্ট জলদাপাড়া অভয়ারণ্যে আয়োজিত এই উৎসব শুধু একটি খাদ্য উৎসব নয়, বরং নদী সংরক্ষণ ও স্থানীয় মাছের পরিচিতি বাড়ানোর এক আন্তরিক প্রয়াস।
এই উৎসবের কেন্দ্রে রয়েছে আলিপুরদুয়ার জেলার নিজস্ব নদী — তোর্ষা, মুজনাই ও রায়ডাক থেকে ধরা এলং মাছ। অত্যন্ত সুস্বাদু এই মাছের স্বাদ একবার জিভে লাগলে কেউ আর বোরোলির কথাই ভাবে না — এমনটাই দাবি ভোজনরসিকদের। এতদিন পর্যটকদের কাছে ডুয়ার্সের নদী মানেই ছিল বোরোলি মাছ, কিন্তু এই উৎসবের মাধ্যমে পর্যটকেরা এবার নতুন করে চিনতে পারবেন এলং মাছকে — দেখতে কেমন, কীভাবে রান্না হয়, এমনকি রেসিপিও শিখে নিতে পারবেন।
উৎসবের আয়োজকরা জানিয়েছেন, শুধু এলং নয়, থাকবে বোরোলির ঝাল, কুচো চিংড়ির তরকারি, গুতম মাছের ঝোল সহ নানা ছোট মাছের পদ। এই উৎসবে স্থানীয় সংস্কৃতি ও স্বাদের এক মেলবন্ধন ঘটবে, যা পর্যটকদের জন্য হয়ে উঠবে স্মরণীয়।
এই উৎসবের সবচেয়ে বড় বার্তা হলো — “নদী বাঁচলে, বাঁচবে নদীয়ালি মাছ”।
পর্যটকরা শুধু খেয়ে-দেয়ে মজা পাবেন না, বরং নদী সংরক্ষণ নিয়ে নিজেদের মতামত জানাতে পারবেন, অংশ নিতে পারবেন সচেতনতামূলক কর্মসূচিতে। আয়োজকদের আশা, এই উৎসব শুধু এলং মাছের স্বাদেই নয়, নদী নিয়ে ভাবনার ক্ষেত্রেও নতুন ধারা সৃষ্টি করবে।
জলদাপাড়ার পর্যটন ব্যবসায়ী ও উৎসবের অন্যতম আয়োজক বিশ্বজিৎ সাহা বলেন,“নদীর মঙ্গল কামনায় এই উৎসব। নদী বাঁচলে প্রাণ পাবে এলং মাছ। আলিপুরদুয়ার জেলার বড় আপন এই মাছ। পর্যটকদের পাতে শোভা বাড়িয়ে তুলবে এবারে এই মাছ — এটাই আমাদের আশা।”
এলং বোরোলি উৎসব নিছক এক খাদ্য উৎসব নয়, এটি উত্তরবঙ্গের নদীসংস্কৃতিকে তুলে ধরার এক বড় মঞ্চ। নদী, প্রকৃতি, খাদ্য ও পর্যটনের এক সুন্দর মিলনস্থল হয়ে উঠবে এই উৎসব।
মাদারিহাট থেকে আবিদ হোসেনের রিপোর্ট
