রাসমেলা মাঠের জনসভা থেকে একাধিক ইস্যুতে কেন্দ্রকে আক্রমণ মমতার
কোচবিহারঃ রাসমেলা মাঠের জনসভা থেকে ফের একাধিক ইস্যুতে কেন্দ্রকে আক্রমণ শোনালেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একই সঙ্গে দলীয় ঐক্য বজায় রেখে এসআইআর প্রক্রিয়ায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর বার্তা দিলেন তিনি।সভায় প্রথমেই নয়া শ্রম কোড ও ১০০ দিনের কাজ নিয়ে কেন্দ্রের অবস্থানকে তীব্র কটাক্ষ করেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর অভিযোগ কেন্দ্র বাংলার ‘অবমাননা’ করতে চাইছে। জনসভা মঞ্চেই কেন্দ্রের পাঠানো সেই নির্দেশিকা ছিঁড়ে প্রতিবাদ জানান তিনি। মঙ্গলবার কোচবিহার রাসমেলার মাঠে তৃণমূলের এই জনসভায় জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কর্মী সমর্থকরা অংশ নেন। সভা মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী উদয়ন গুহ, বুলু চিক বড়াইক, তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিক, কোচবিহার পৌরসভার চেয়ারম্যান রবীন্দ্রনাথ ঘোষ, সাংসদ জগদীশচন্দ্র বর্মা বসুনিয়া, বিধায়ক সংগীতা রায়, পরেশ চন্দ্র অধিকারী,রাজ্যসভার সাংসদ প্রকাশ চিকবড়া, প্রাক্তন মন্ত্রী বিনয় কৃষ্ণ বর্মন, কোচবিহার জেলা পরিষদের সভাধিপতি সুমিত্রা বর্মন, সহ-সভাপতি আব্দুল জলিল আহমেদ প্রমূখ। এদিন তৃণমূলের এই সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “হঠাৎ করে গত পরশু একটা চিঠি দিয়েছে এক বছর পর! তাতে বলা হয়েছে ৬ ডিসেম্বর থেকে নতুন শর্ত। নয়া শ্রম কোড। ত্রৈমাসিক লেবার বাজেট দেখাতে হবে সময় কোথায়? ডিসেম্বর, আর ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন! বলছে, এক গ্রামে ১০ জন কাজ পাবে এটা হয় নাকি? একটা পরিবারেই ১০ জন গরিব মানুষ থাকে। আবার ট্রেনিং দিতে হবে কবে দেবেন? আর কবে কাজ দেবেন? এই কাগজটা ভ্যালুলেস, এর কোনও দাম নেই।”১০০ দিনের কাজ নিয়ে কেন্দ্রকে নিশানা করে তিনি আরও বলেন, “আবার আমরা ক্ষমতায় আসব। কর্মশ্রীর ৭৫ দিনের কাজ হয়েছে, ৭০ দিন হয়ে গিয়েছে। আরও ৭৫–৮০ দিন করব। ১০০ দিনের কাজ বাংলাই করবে, ভিক্ষে আমরা চাই না। এটা কোনও নোটিস নয় এটা অপমানের কাগজ।”
এরপরই এসআইআর নিয়ে মানুষের দুশ্চিন্তা দূর করতে তিনি জানান, হেয়ারিং-এ ডাক এলে যে কাগজপত্র আছে, তা নিয়েই যেতে হবে। কোনও সমস্যা হলে সরকার ও দল পাশে থাকবে।তিনি ঘোষণা করেন, প্রতিটি গ্রাম পঞ্চায়েতে ‘মে আই হেল্প ইউ’ ক্যাম্প হবে, যেখানে ভোটার তালিকা সংশোধন সংক্রান্ত সমস্ত সহায়তা পাওয়া যাবে। পাশাপাশি বিএলএ ও দলীয় নেতৃত্বকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার নির্দেশ দিয়ে বলেন, “যুদ্ধ যখন বাঁধে, সবাইকে কাঁধে কাঁধে মিলিয়ে লড়াই করতে হয়।”
দলীয় সূত্রে জানা যায়, সোমবার প্রশাসনিক বৈঠক শেষে জেলার নেতৃত্বদের সঙ্গে পৃথক ভাবে আলোচনা করেন মুখ্যমন্ত্রী। তার পরেই পরদিন সভা থেকে স্পষ্ট বার্তা দেন— দলীয় ঐক্য ভাঙলে চলবে না।বিজেপিকে কটাক্ষ করে মমতার মন্তব্য, “কখনও নোটবন্দি, এখন এসআইআরের নামে ভোটবন্দি। ১ কোটি ভোটারের নাম বাদ দেওয়ার পরিকল্পনা করছে তারা। মারা যায়নি, মৃত দেখানো হচ্ছে।”
