সহায় সম্বলহীন বৃদ্ধ, দিন কাটছে অর্ধাহারে খোঁজ রাখে না কেউ

পরিমল বর্মন, ঘোকসাডাঙ্গা,২ জুন: দরজাহীন গোয়াল ঘরের মত একটি ঘর,যে ঘরে একদিকে দাঁড়ালে অন্যদিকের সবুজ মাঠ চোখে পড়ে অর্থাৎ ঘরের বেড়া আছে বললেও চলে আর নাই বললেও চলে। চারিদিকে বিদ্যুতের আলো থাকলেও অসহায় বৃদ্ধ ধরণী কান্ত বর্মনের ঘরে পৌঁছায়নি সেই আলো। বয়সের ভারে ইদানিং চোখেও দেখেন কম। কোন মতে ভিক্ষা বৃত্তি করে দুমুঠো খাবার জুটলেও লক ডাউনে সেটাও মিলছে না। তাই অর্ধাহারে দিন কাটছে ধরণী কান্ত বর্মনের। জানা গিয়েছে, মাথাভাঙ্গা ২ ব্লকের লতাপাতা গ্রাম পঞ্চায়েতের দ্বারিকামারী বাবুর খামাত গ্রামের অধিবাসী ধরণী কান্ত বর্মন এক সময় আর্থিক সম্পন্ন ছিলেন কিন্তু কালের গতিতে সব ফুরিয়ে গেছে।কখনো ভিক্ষা বৃত্তি করে কখনো প্রতিবেশীদের থেকে চেয়ে চিনতে কোনো রকম একবেলা খেয়ে দিন কাটান ধরণী বাবু। তিন কন্যা এবং এক পুত্র সন্তান নিয়ে ছিল সংসার। তিন মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন। পত্নী বিয়োগ হয়েছে বেশ কিছু কাল আগে। এক মাত্র পুত্র তারও হয়েছে বিয়ে কিন্তু নিয়তির নিষ্ঠুর পরিহাসে সেই ছেলে মস্তিস্ক বিকৃত হয়ে নিজের খাবারের জোগাড় করতেই হিমশিম। এক নাতি আছে কিন্তু সেও দিন মজুরি করে, মাঝে মাঝে তারও জোটে না খাবার। তাই সত্তুড়র্ধ বৃদ্ধ ধরণী কান্ত বর্মনকে দেখার নেই কেউ। কেউ তার খোঁজ রাখেনা বলে জানান ধরণী বাবু। মেলেনি ভাতা বা সরকারি ঘর। মাঝে মাঝে তার মেয়ে এসে বাবার জন্য কিছু খাবারের ব্যবস্থা করেন কখনো ধরণী বাবু ভিক্ষাবৃত্তি করে একাই কোনো রকম ভাবে অর্ধাহারে দিন কাটান। আবার অনেক সময় প্রতিবেশীদের বাড়িতে চেয়ে চিনতে একবেলা খেয়ে দিন কাটান তিনি। বয়সের ভারে দুর্বল ধরণী বাবু চোখেও কম দেখেন, আবার স্মৃতি শক্তি হারিয়ে রেশন কার্ড কোথায় রেখেছেন তাও জানেন না তিনি তাই নিয়মিত রেশনের চালও পান না তিনি বলে জানান ধরণী বাবু। প্রতিবেশী ধজেন বর্মন বলেন, এই বুড়োটা খুব কষ্টে দিন কাটান। একাই থাকেন এবং নিজেই রান্না করে খান কিন্তু সবদিন ঘরে চাল থাকেনা মাঝে মধ্যে প্রতিবেশী আমরা কেউ কেউ খাবার দিয়ে থাকি । অনেক সময় সারাদিন না খেয়েই দিন কাটান ধরনী বাবু ওরফে মাগুর বুড়া। এই বিষয়ে লতাপাতা গ্রাম পঞ্চায়েতে প্রধান বিনোদা বর্মন বলেন, বিষয়টি আমি জানতাম না, সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েতের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি দেখছি। অন্যদিকে মাথাভাঙ্গা ২ ব্লকের সভাপতি দীপ্তি তরফদার রায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, এই বিষয়টা আমি জানতাম না।শুনে খুব খারাপ লাগছে । যত তাড়াতাড়ি সম্ভম ধরণী কান্ত বর্মনের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *