নিয়তির নিয়তি, ভাঙাচোরা গোয়াল ঘরে বাস স্বামীহারা নিয়তির, অভাবে বিলিয়ে দিয়েছেন তিন সন্তানকে
ক্ষীরোদা রায়, ধূপগুড়ি:
এ যেন নিয়তির নিয়তি! মরচে ধরা টিনের চাল, ভেঙে পড়া পাটকাঠির বেড়া, মানুষ আর গরুতে এক ঘরে বাস। উন্নয়নের বহর চেনা যায় এভাবেই। আর প্রকৃত গরিব দরদী মানুষকেও খুঁজে পাওয়া যায় বোধহয় এভাবেই!
ধূপগুড়ি ব্লকের শালবাড়ি ১ অঞ্চলের দুরামারির দেউনিয়া পাড়ায় নুন আনতে পান্তা ফুরোয় ভাইয়ের বাড়িতে বাস নিয়তির। তার ভাগ্যনিয়ন্তা যে তার প্রতি এতটাই সদয় ছিল জানতেন না তিনি! স্বামী হারানোর শোক ভূলতে না ভূলতেই নিয়তির যে গর্ভের তিন সন্তানদেরও যে অভাবের তাড়নায় বিলিয়ে দিতে হবে স্বয়ং বিধাতা বলে যদি কেউ থাকেন তিনি জানেন কেন তাকে এ কাজ করতে হয়েছে। জানতেন না শুধু স্থানীয় নেতা-নেত্রীরা। তাই হয়তো হামার চ্যানেলের মাধ্যমে খবর পেয়ে ধূপগুড়ির বিধায়ক আর বিডিওকে ছুটতে হয় গোয়াল ঘরে বাস করা নিয়তির করুন দশা দেখতে। বিধায়ক মিতালী রায় সেই দৃশ্য দেখে এসে জানালেন, “এ যুগেও যে গোয়াল ঘরে গরু-মানুষে একসাথে থাকতে পারে বিশ্বাস করা কঠিন, স্থানীয় কোন নেতা-নেত্রী আমাকে বিষয়টি জানাতে পারতো।” বিধায়ক জানান, “নিয়তি রায়ের বাড়িতে ধূপগুড়ির বিডিওকে সঙ্গে নিয়ে যাই, বিডিওকে বলি যেকোন ভাবে একটি ঘরের ব্যবস্থা করে দিতে হবে। ” তিনি আরো জানান, ” এই মুহূর্তে আমি যতটা পারবো চেষ্টা করবো এই মুহূর্তে নিয়তি রায়ের বাড়িতে টিনের চালের একটা ঘর তৈরি করে দিতে, যাতে ভাঙাচোরা গোয়াল ঘরে তাকে থাকতে না হয়।” নিয়তি রায় যে গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় বাস করেন সেখানকার জনপ্রতিনিধি সিপিএম থেকে নির্বাচিত, এ প্রসঙ্গে মিতালী রায় বলেন, সিপিএমের পঞ্চায়েত সদস্য থাকার পরেও কি করে একজন দরিদ্র মহিলা সরকারি ঘর থেকে বঞ্চিত হন, প্রশ্ন বিধায়কের। নিয়তি রায়কে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন ধূপগুড়ি পঞ্চানন বর্মা স্মারক সমিতি ও উত্তুরা সোত পত্রিকা গোষ্ঠী। সংগঠনের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ড: রতন রায় বলেন, আমরা সংগঠনের পক্ষ থেকে যৎসামান্য সাহায্য করেছি, আশা করি সবাই এগিয়ে আসবে ঐ পরিবারটিকে সাহায্য করতে। চোখ মুছতে মুছতে নিয়তি রায় বলেন, “এমএলএ এসেছিলেন, তিনি দেখে গিয়েছেন আমাদের অবস্থা। “