প্রয়াত ফালাকাটা ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি সন্তোষ বর্মন
সন্তোষ বর্মন ও উৎপল রায়, ফালাকাটা: না ফেরার দেশে চলে গেলেন ফালাকাটা ব্লক তৃণমূল কংগ্রেস এর সভাপতি সন্তোষ কুমার বর্মন।
আজ সকাল ১০টায় শিলিগুড়ির একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন ফালাকাটা ব্লক তৃণমূল কংগ্রেস এর সভাপতি ও আলিপুরদুয়ার জেলা পরিষদের কৃষি কর্মাধ্যক্ষ তথা শিক্ষক সন্তোষ কুমার বর্মন। জানা গিয়েছে, তিনি করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন। পরিবারে রেখে গেলেন স্ত্রী ও দুই পুত্র সন্তানকে। মৃত্যু কালে তাঁর বয়স হয়েছিলো ৬৭ বছর। শিক্ষকতার পেশা থেকে অবসর নেওয়ার পর রাজনীতি ছিল তাঁর ধ্যানজ্ঞান। দীর্ঘদিন ধরে নানান শারীরিক সমস্যায় ভূগছিলেন তিনি। গত একমাস থেকে তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসার জন্য বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাঁকে। পরিবার সূত্রে খবর, তার শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ প্রত্যঙ্গ কর্ম ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছে। মৃত্যুর পর সন্তোষ বাবুর মরদেহ শিলিগুড়িতেই দাহ করা হবে বলে জানা গেছে।
প্রয়াত বিধায়ক অনিল অধিকারীর পর তিনি ফালাকাটা ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি পদে নিযুক্ত হন। উল্লেখ্য, ফালাকাটা বিধানসভা এলাকায় একের পর এক রাজনৈতিক নেতার প্রয়াণে এলাকাবাসী শোকাহত। ২০১৯ সালের অক্টোবর মাসে বিধায়ক অনিল অধিকারী, অনিল বাবুর মৃত্যুর কিছুদিন পরে প্রাক্তন বনমন্ত্রী যোগেশ বর্মনের মৃত্যু হয় ও গত মাসের ৩রা সেপ্টেম্বর এলাকার দাপুটে নেতা চঞ্চল অধিকারী ইহলোক ত্যাগ করেন। প্রয়াত বিধায়ক অনিল অধিকারীর মৃত্যুর পর ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে দলকে জেতানোর লক্ষ্যে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সন্তোষ বাবুকে দলের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে জায়গা দিয়েছেন। অনিল বাবুর মৃত্যুর পর ফালাকাটা বিধানসভা উপ নির্বাচনের সম্ভাবনা থাকায় তিনি দলকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। যদিও করোনা অতিমারির কারণে উপ নির্বাচন হচ্ছে না, কিন্তু ২০২১ এর দিকে তাকিয়ে সন্তোষ বাবুকেই দলের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে রাখা হয়। সন্তোষ বর্মনের মৃত্যু তৃণমূল কংগ্রেসের ভিতর নেতৃত্বের সংকট তৈরি করে দিলো। সন্তোষ বাবুর মৃত্যু রাজবংশী মুখ হিসাবে যেমন ফালাকাটা তৃণমূল কংগ্রেসে কিছুটা অভাব তৈরি করে দিল অপরদিকে দলের ভেতর গ্রহণযোগ্য মুখের অভাব তৈরি হলো বলে বিশ্বস্ত সূত্রে খবর। দলের ভেতর ব্লক নেতৃত্বের মধ্যে মতানৈক্য থাকায় বিজেপি বাড়তি সুবিধা পেয়ে যাবে বলে সূত্রের খবর। তবে দলকে মজবুত আসনে আনতে বদ্ধপরিকর তৃণমূল কংগ্রেস নেতারা এমনটাই জানা যাচ্ছে। যদিও এই শোকের দিনে কেউ রাজনৈতিক মন্তব্য করতে চাইছেন না।
ফালাকাটা ২নং অঞ্চলের কিষান সেলের সভাপতি দীপক রায় জানান, “সন্তোষ বাবুর প্রয়াণে আমরা খুবই শোকাহত, তিনি ১৯৯৮ সাল থেকেই তৃণমূল কংগ্রেস এ নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করে আসছেন”।