পুণ্ডিবাড়িতে নির্যাতিতা শিশুর বাড়িতে পৃথকভাবে এলেন নিশীথ-মালতী, বিজেপির বিরুদ্ধে রাজনীতির অভিযোগ পার্থর
নিজস্ব সংবাদদাতা, কোচবিহার: কোচবিহারের পুন্ডিবাড়িতে নির্যাতিতা শিশুর বাড়িতে এসে নির্যাতিতা শিশুর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করে গেলেন কোচবিহারের সাংসদ নিশীথ প্রামাণিক, বিজেপির জেলা সভাপতি মালতী রাভা ও তৃণমূল কংগ্রেসের কোচবিহার জেলার জেলা সভাপতি পার্থপ্রতিম রায়। পার্থপ্রতিম রায় পৃথকভাবে এসে নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে দেখা করবেন এটা স্বাভাবিক ঘটনা হলেও, বিজেপির জেলা সভাপতি মালতী রাভা ও সাংসদ নিশীথ রায় এলেন পৃথকভাবে। সাংসদ নিশীথ প্রামাণিক আসার কিছুক্ষণ পরেই নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে আসেন মালতী রাভা। এদিন বিকেল নাগাদ পুণ্ডিবাড়িতে নির্যাতিতা শিশুর বাড়িতে আসেন তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতি।
তবে বিজেপি ও তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা নেতারা আসার পরেই শুরু হয় রাজনীতি। সাংসদ নিশীথ প্রামাণিক নির্যাতিতা শিশুর বাবার হাতে কিছু নগদ অর্থ তুলে দিয়েছেন। তিনি বলেন, পুণ্ডিবাড়িতে যা ঘটেছে তা খুবই নিন্দনীয় ঘটনা। এর জন্য দায়ী বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। তিনি সমস্ত বাংলাদেশী রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছেন, আর তারাই এ ধরনের কাজ করছে। ওই পরিবারটিকে উচ্ছেদের চেষ্টা করা হচ্ছিল। কিন্তু সেই চেষ্টা ব্যর্থ হওয়ায় সেই পরিবারের শিশুটিকে ধর্ষণ করা হয়েছে। তিনি অন্য রাজ্যের ধর্ষণের ঘটনা তুলে মুখ্যমন্ত্রীর সমালোচনা করে বলেন, অন্য রাজ্যের বিক্ষিপ্ত ঘটনাকে নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যজুড়ে নানা কর্মসূচি পালন করছেন, অথচ একজন মহিলা হয়ে নারীদের সুরক্ষা দিতে পারছেন না। তিনি দাবি করে বলেন, এই অবস্থায় যেকোন পরিস্থিতিতে ঐ পরিবারটির পাশে তিনি দাঁড়িয়ে থাকবেন। নিশীথ প্রামাণিক পুণ্ডিবাড়িতে নির্যাতিতার বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার কিছুক্ষণ পরেই বিজেপি জেলা সভাপতি মালতী রাভা আসেন ঐ শিশুটির বাড়িতে। আর ঐ সময় তৃণমূলের বঙ্গ জননী বাহিনীর সদস্যরা নির্যাতিতার বাবা মাকে ঘড়ে আটকে রাখে বলে অভিযোগ বিজেপির। অভিযোগ ওঠার পরই পুণ্ডিবাড়ি থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। ঘটনাস্থলে পুলিশের সঙ্গে বাকবিতন্ডা শুরু হয় বিজেপি নেতা কর্মীদের। তারপরেই ঘটনাস্থল ছেড়ে যান বিজেপি নেতাকর্মীরা। তবে নিশীথ প্রামাণিক ও মালতী রাভা পৃথকভাবে আসায় বিজেপিতে গোষ্ঠী দ্বন্দ্ব তৈরি হয়েছে বলে দাবি রাজনৈতিক মহলের।দুই বিজেপি নেতা যাওয়ার পরেই বিকেল নাগাদ পুণ্ডিবাড়িতে আসেন তৃণমূল কংগ্রেসের কোচবিহার জেলার জেলা সভাপতি পার্থপ্রতিম রায় সহ কোচবিহার-২ ব্লকের তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্ব। পার্থপ্রতিম রায় বলেন, পশ্চিমবঙ্গে এই ধরনের ঘটনাকে অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে দেখা হয়, পুলিশ অভিযোগ পাওয়ার পরেই অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হয়। আইনি প্রক্রিয়া চলছে, বুধবার নির্যাতিতা ও তার মায়ের জবানবন্দি নেওয়া হবে। আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে অপরাধীর শাস্তি হবে বলে পার্থ বাবুর দাবি। বিজেপির বিরুদ্ধে ধর্ষণের ঘটনার রাজনীতি করার অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, এই ঘটনা নিয়ে বিজেপি অতি সক্রিয়তা দেখাচ্ছে এবং রাজনীতি করছে। তার অভিযোগ, এই ঘটনা নিয়ে একটা মীমাংসার চেষ্টা করা হয়েছিল।এদিকে ঘটনার নিন্দা করে বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন ঘটনায় জড়িত অপরাধীদের শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ দেখিয়ে ডেপুটেশন জমা দেয় পুণ্ডিবাড়ি থানায়।