ঐতিহ্যবাহী আঈ ভান্ডানি পূজা মেখলিগঞ্জে
মেখলিগঞ্জঃ প্রতিবছরের ন্যায় এবছরও অনুষ্ঠিত হচ্ছে মেখলিগঞ্জ ব্লকের ৩১১ বছরের পুরনো ঐতিহ্যবাহী আঈ ভান্ডানি পুজা। তবে প্রতিবছর এই পুজোকে ঘিরে ১৫ দিন ব্যাপী বিরাট মেলা বসলেও এবারের করোনা আবহে প্রশাসন থেকে মেলার অনুমতি মেলেনি। তাই শুধুমাত্র পুজো অনুষ্ঠিত হবে। তবে নিয়ম নিষ্টায় কোনও ঘাটতি রাখা হবেনা বলে জানান আয়োজক কমিটি। চলবে মানত অনুসারে কবুতর ও পাঁঠা বলি। তবে পুজো অনুষ্ঠিত হবে সম্পূর্নভাবে সরকারি গাইডলাইন মেনে। পুজো কমিটির পক্ষ থেকে মন্দির চত্বরে সরকারি ভাবে পুজোর কয়েকদিন স্যানিটাইজড করার দাবি জানানো হয়েছে। সকলকে মাস্ক পড়ে পুজোতে আসার অনুরোধ জানিয়েছে পুজা কমিটি।
জানা গিয়েছে, মা ভান্ডানি এখানে দ্বিভূজা, নিরস্ত্র ও ব্র্যাঘ্রবাহিনী। তার এক পাশে মা ধন লক্ষী আর এক পাশে বিদ্যার দেবী সরস্বতী। মেখলিগঞ্জের রানিরহাটের ভান্ডানি পুজা ও মেলা উত্তরবঙ্গের একটি ঐতিহ্যশালী ভান্ডানী পুজা। শুরু থেকেই এই পুজায় বলি প্রথার প্রচলন রয়েছে। বর্তমানে ভক্তরা পাঁঠা ও পায়রা মায়ের নামে উৎসর্গ করেন। পুজোর দিন পাঁচ শতাধিক কবুতর ও শতাধিক পাঁঠা মায়ের মন্দিরে জমা পড়ে।
লোক বিশ্বাস মতে, দশমী তিথিতে মর্ত্যলোক থেকে কৈলাশে সপরিবারে ফিরছিলেন মা দূর্গা। ফেরার পথ খুঁজে না পেয়ে সেখানেই একটি মেয়ের রূপ ধারন করে সেখানেই কান্না জুড়ে দেন দূর্গতিনাশিনী। পরে রাজবংশী সমাজের একদল মানুষ দয়াবশত ওই অপরিচিত মেয়েটির কান্না শুনে তাকে বন থেকে উদ্ধার করে নিজেদের ঘরে নিয়ে আসেন। পরে তার ফিরে যাওয়ার পথের দুধারের খেত শস্য শ্যামলায় ভরে ওঠে। তখন রাজবংশী সমাজের মানুষ বুঝতে পারে যে, এই মেয়ে কোনও সাধারন মেয়ে নয়। নিশ্চয়ই কোনও দেবী হবেন।রাজবংশী কৃষকরা তখন দেবীর পুজোর আয়োজন করেন। ভক্তদের আরাধনায় দেবী সন্তুষ্ট হয়ে দেবী প্রান ভরে আশির্বাদ করেন।ফলে কৃষকদের দূর্দশা কেটে যায়। দেবীর আশির্বাদে শস্যের ভান্ডার পূর্ন হয় বলে দেবী ভান্ডানী নামে পরিচিত হন।