ফের বৃষ্টির আশঙ্কায় দ্রুত আলু তুলে ঘরে রাখছেন আলু চাষীরা
ক্ষীরোদা রায়, ধূপগুড়ি: গত তিনদিন পরপর ঝড় বৃষ্টি হওয়ায় ফের আবার ঝড় বৃষ্টি হওয়ার আতঙ্ককে মাথায় রেখে দ্রুত আলু তুলে ঘরে জমা করছেন আলু চাষীরা। বৃষ্টির দরুন আলুর ক্ষতি হতে পারে, কমে যেতে পারে আলুর দাম। সেই আশঙ্কায় ক্ষেত্রে থেকে ফসল তুলতে চা বাগানের শ্রমিকদের কাজে লাগিয়ে আলু তোলা হচ্ছে ডুয়ার্সের ধূপগুড়িতে। ধূপগুড়ির গাদং ১ ও ২, সাকোয়াঝোড়া ২ অঞ্চলের বিস্তির্ণ জমিতে এদিন এই চিত্রই দেখা গেল।মার্চের শুরুতেই ঝড় ও বৃষ্টির সম্ভাবনা এমনিতেই কম থাকে, কিন্তু এ বছর মার্চ মাসের শুরুতে যেভাবে পর পর ঝড় বৃষ্টি হয়েছে, ফের আবার বৃষ্টি হলে জমিতে থাকা আলু পচে যেতে পারে বলে আশঙ্কা চাষিদের। গাদংয়ের কৃষক রামপ্রসাদ রায় বলেন, ‘বৃষ্টিতে ভিজে যাওয়া আলু নষ্ট হয় তাড়াতাড়ি, সেই আলু কিনতেও চান না ব্যবসায়ীরা, যদিও বা কিনেন তাও সস্তা দরে।’উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার,বুধবার এবং শনিবার সন্ধ্যায় ডুয়ার্সের বেশ কিছু জায়গায় দমকা হাওয়ার সাথে মাঝারি বৃষ্টিপাত হয়। বৃষ্টিতে বেশ কিছু জায়গায় আলু ক্ষেতে জল জমে যায়। পরপর বৃষ্টিতে ভেজা জমিতে থাকা আলু পচে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে বলে। সাকোয়াঝোড়া ২ অঞ্চলের মল্লিক পাড়া গ্রামের আলু চাষি নারায়ণ দাস বলেন, “ষোল বিঘা জমির মধ্যে নয় বিঘা জমির আলু ঘরে মজুত করে রাখা আছে, বাকি আলু এখনও মাঠেই আছে।” গাদং ১ অঞ্চলের কাজিপাড়া গ্রামে দেখা গেল পার্শ্ববর্তী চা বাগান থেকে আসা মহিলা শ্রমিকদের আলু তোলার কাজে নিয়োগ করা হয়েছে। আলু চাষী কাজি মজফফর হোসেন বলেন, “ঝড় বৃষ্টিতে ক্ষতির আশঙ্কায় কৃষকরা বেশি শ্রমিক নিয়োগ করে আলু ঘরে তুলছে, আলুর দাম কমে গেলে খরচ কিভাবে উঠে আসবে এখন সেই আশঙ্কাতে দিন কাটাতে হচ্ছে।”বর্তমানে কেজি প্রতি লাল আলু সাড়ে নয় টাকা থেকে সাড়ে নয় টাকা দামে বিক্রি করছেন চাষীরা। অপরদিকে সাদা আলুর দাম সাত থেকে আট টাকা কেজি। তবে খুচরো বাজারে আলুর দাম দশ টাকার বেশি। কৃষকদের আশঙ্কা ফের বৃষ্টি হলে আলুর দাম কমে যাবে।স্থানীয় গ্রামবাসী তথা ধূপগুড়ি ব্লকের সিপিআইএম নেতা চিন্তামোহন রায় বলেন, “কৃষকদের নিয়ে কেন্দ্র-রাজ্য কোন সরকারই ভাবেনা, প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের জন্য নয়া কৃষি আইনে কৃষকদের সে রকম কোন সুবিধাও তো দেয়নি সরকার। কৃষকদের স্বার্থ নিয়ে ভাবেনা কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার।” তৃণমূল কংগ্রেস নেতা তথা ধূপগুড়ি ব্লক যুব তৃণমূল কংগ্রেসের সম্পাদক মহাদেব রায় বলেন, “কৃষিক্ষেত্র নিয়ে কেন্দ্র সরকারের আরও বেশি সদর্থক দৃষ্টিভঙ্গি নেওয়া দরকার, সবকিছুতেই বেসরকারিকরণ করলে তার ফল নির্বাচনে পাবে বিজেপি শাসিত কেন্দ্র সরকার।”